কর্পোরেট ডেস্ক: দেশের শীর্ষস্থানীয় নিত্য-ব্যবহার্য ও ভোগ্যপণ্য উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড (ইউবিএল) কেওক্রাডং বাংলাদেশ (কেবি)–এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ ২০২৫। দেশের অন্যতম পরিবেশ–সংবেদনশীল উপকূলীয় অঞ্চল সেন্ট মার্টিনে এ কার্যক্রম আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় অধিবাসীদের থেকে আসা ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক সেন্ট মার্টিনের সৈকত থেকে ১,৮৫০ কিলোগ্রাম সমুদ্র বর্জ্য সংগ্রহ করেন। পরে এসব বর্জ্য নিরাপদভাবে মূল ভূখণ্ডে নিয়ে পরিবেশবান্ধব উপায়ে অপসারণ করা হয়। খাদ্যের মোড়ক, প্লাস্টিকের বোতল ও ঢাকনা, প্লাস্টিক ব্যাগ, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সামগ্রী এবং পরিত্যক্ত মাছ ধরার জালের মতো নানান ধরনের বর্জ্য এই অভিযানে তুলে আনা হয়। আয়োজকরা আশা করছেন অনিয়ন্ত্রিত বর্জ্য ও পর্যটনের চাপজনিত পরিবেশ–ঝুঁকি কমাতে এই উদ্যোগ ভূমিকা রাখবে।
এ বছর পর্যটন মৌসুমের প্রথম সপ্তাহান্তে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কৌশলগতভাবে এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান আয়োজন করা হয়। স্বেচ্ছাসেবকেরা দর্শনার্থীদের দায়িত্বশীল আচরণে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক সেশন ও কমিউনিটি কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সঠিকভাবে প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলার অভ্যাস গড়ে তোলা ও দীর্ঘমেয়াদি আচরণগত পরিবর্তন আনাও এ কার্যক্রমের লক্ষ্য ছিল। এই উদ্যোগ স্থানীয়দের পরিবেশের প্রতি দায়িত্ববোধ শক্তিশালী করার পাশাপাশি তরুণদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশ–সচেতনতা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওশান কনসারভেন্সির দেশীয় সমন্বয়কারী হিসেবে কেওক্রাডং বাংলাদেশ গত ১৫ বছর ধরে সেন্ট মার্টিনের সৈকতে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং বৈশ্বিক মেরিন ডেব্রিস ডাটাবেসে মূল্যবান তথ্য যোগ করেছে। কক্সবাজার–টেকনাফ উপদ্বীপ ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপজুড়ে তাদের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা বাংলাদেশের সামুদ্রিক দূষণ সম্পর্কে বুঝতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।
প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্বকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইউনিলিভার বাংলাদেশ দেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় রূপান্তরমূলক পরিবর্তন আনতে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রামে দেশের সবচেয়ে বড় প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি পরিচালনা করে, ভার্জিন প্লাস্টিক কমানো ও রিফিলসহ নানান উদ্ভাবনী সমাধান উন্নয়ন করছে এবং সারা দেশে ভোক্তা–সচেতনতা বাড়াতেও নিয়মিত কাজ করছে।
ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপস অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স–এর পরিচালক শামিমা আক্তার বলেন, “নিরাপদ ও উচ্চমানের পণ্য ভোক্তার কাছে পৌঁছে দিতে প্লাস্টিক প্যাকেজিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এর পরিবেশগত প্রভাব কমাতে দায়িত্বশীল নকশা, ভার্জিন প্লাস্টিক ব্যবহার হ্রাস এবং পুনর্ব্যবহৃত উপকরণের ব্যবহার বাড়ানো অপরিহার্য। ইউনিলিভার বাংলাদেশে আমরা বিভিন্ন অংশীদারের সঙ্গে মিলে বাজারে যত প্লাস্টিক দিচ্ছি, তার চেয়ে বেশি প্লাস্টিক পরিবেশ থেকে অপসারণে কাজ করছি। একইসাথে এমন ব্যবস্থাও গড়ে তুলছি যা সঠিক উপায়ে সংগ্রহ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আরও কার্যকর করে তোলে। সেন্ট মার্টিনে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ ২০২৫–এ আমাদের অংশগ্রহণ এই প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন; এখানে নাজুক ইকোসিস্টেম রক্ষা ও প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় যৌথ দায়িত্বকে শক্তিশালী করতে তরুণ-তরুণী ও স্থানীয়দের সক্রিয়ভাবে যুক্ত করা হয়েছে।”
ওশান কনসারভেন্সির ইন্টারন্যাশনাল কোস্টাল ক্লিনআপ–এর কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মুনতাসির মামুন বলেন, “বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বদ্বীপ এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অসাধারণ সমুদ্রসৈকত রয়েছে, এটি আমাদের জন্য সত্যিই গর্বের বিষয়। সেন্ট মার্টিন এই দেশের জাতীয় সম্পদগুলোর একটি। তবে ক্রমবর্ধমান সামাজিক–অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এই সুন্দর দ্বীপ ও উপকূলের জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি তৈরি করছে। আমরা বিশ্বাস করি, পরিবেশ সংরক্ষণে ইউনিলিভারের অগ্রণী ভূমিকা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। আমাদের এই অংশীদারত্ব অন্যদেরও দেশের ভালোর জন্য এগিয়ে আসতে উদ্বুদ্ধ করবে।”
ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড এবং তাদের পরিবেশ–সংক্রান্ত উদ্যোগ সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন: www.unilever.com.bd


