কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ব্যবসায়ীরা তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কোনও সম্মতি নেয়নি বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে ভোজ্য তেলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমি আধা ঘণ্টা আগে এই তথ্য জেনেছি। দাম বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিককারণ নেই। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
তেলের দাম বাড়াতে ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছ থেকে কোনো সম্মতি নিয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমাদের কোনও সম্মতি নেয়নি তারা। আমাদের সঙ্গে তাদের কোনও কথা হয়নি। আমরা এখন আন্তঃমন্ত্রণালয় একটি বৈঠক করেছি। বৈঠক শেষে এ বিষয়ে আমাদের পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করবো। সব কোম্পানি সামগ্রিকভাবে একত্রিত হয়ে তেলের দাম বাড়িয়েছে।
ব্যবসায়ীরা শাস্তিযোগ্য কোনো অপরাধ করে থাকলে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, ‘নিশ্চিতভাবে, কেন নেব না? আইনসঙ্গত আমাদের যে ব্যবস্থাগুলো আছে আমরা সবগুলো নেব।’
তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেও, সরকার এ ব্যাপারে কিছুই জানত না। এর আগেও ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ালে সরকার সেটি মেনে নেয়নি, ব্যবস্থা নিয়েছিল। প্রায় আড়াই মাস আগের দামেই বিক্রি হয়েছে।’
ব্যবসায়ীদের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ আছে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণ আছে কি নেই, সেটা আমাদের পদক্ষেপের মাধ্যমে জানতে পারবেন। নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই আছে।
তিনি বলেন, তারা যে দামে আজকে তেল বিক্রি করছে তার থেকে ২০ টাকা কমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তেল কিনতে পারছে। সুতরাং ২০ টাকা বাড়তি দামে তেল বিক্রি যৌক্তিক নয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে এ বিষয়ে। আইনগত যা ব্যবস্থা আছে নেয়া হবে। এর আগেও তারা দাম বাড়িয়েছিল। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এতে একমত পোষণ না করায় দাম বাড়েনি।
উপদেষ্টা আরও বলেন, যদি দাম বাড়ানোর যৌক্তিক কারণ থাকে সেটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সরবরাহ বিঘ্নিত করতে চায় না সরকার। অযৌক্তিক কিছু মানবে না বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। রোজা সামনে রেখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভালো প্রস্তুতি আছে। আমদানির জন্য গতবারের চেয়েও এবার বেশি ঋণপত্র খোলা হয়েছে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, গতকালও ক্রয় কমিটিতে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন ও এক কোটি লিটার রাইস ব্র্যান তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছি। যেহেতু গতকালও ক্রয় কমিটিতে ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন ও এক কোটি লিটার রাইসব্রান তেল কেনার অনুমোদন দিয়েছি, সেহেতু ৫০ লাখ লিটার তেল যদি আমরা দরপত্রের মাধ্যমে কমদামে কিনতে পারি, তাহলে বাজারে কেন এত বেশি দামে বিক্রি করা হবে? এর কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানো আইনগত বৈধ নয়। এছাড়া কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, সরকারের অনুমোদন না নিয়ে তেলের দাম বাড়ানো হলে সেটা অন্যায়। এক্ষেত্রে আইনের ব্যতয় ঘটেছে। সরকার নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের মনিটরিং আরেও বাড়ানো উচিত।
সম্প্রতি কোনো ঘোষণা ছাড়াই ভোক্তা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এবার লিটারে বেড়েছে ৯ টাকা। নতুন করে বাজারে আসা পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৯৬৫ টাকায়। আগের দাম ছিল ৯২২ টাকা। এ ছাড়া বোতলজাত প্রতি লিটার ১৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বোতলজাত প্রতি লিটার এতদিন ১৮৯ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।
আরও পড়ুন:


