আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কারাবন্দি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ অনেকেই দাবি করেছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী এই কিংবদন্তির মৃত্যু হয়েছে। তবে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমে এখনো এই ‘গুজব’-এর সত্যতা মেলেনি।
এদিকে ইমরানের মৃত্যুর গুজবে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলের বাইরে হট্টগোল তৈরি হয়েছে। সেখানে তার সমর্থকদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন নিরাপত্তাকর্মীরা।
এই গুজবটি তখন ছড়িয়ে পড়ে যখন ইমরান খানের তিন বোন কারাগারে তাদের ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য গিয়ে পুলিশের হাতে ‘নৃশংস মারধরের’ শিকার হন। ‘নিরাপত্তা ঝুঁকির’ কারণ দেখিয়ে তাদের ইমরানের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়নি কারা কর্তৃপক্ষ।
ইমরান খানের বোন নওরীন নিয়াজি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমরা ইমরান খানের স্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আমরা রাস্তা অবরোধ করিনি, জনসাধারণের চলাচলে বাধা দিইনি বা কোনও বেআইনি কাজ করিনি। তবুও, কোনও সতর্কতা ছাড়াই, রাস্তার আলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং তার পরে একটি নৃশংস আক্রমণ করা হয়েছিল। ৭১ বছর বয়সে, আমার চুল ধরে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল এবং রাস্তার ওপারে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’
এ ঘটনায় ইমরানের তিন বোন ও সমর্থকদের ওপর ‘নৃশংস’ পুলিশি হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পিটিআই।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে আদিয়ালা জেল প্রশাসন। তারা জানিয়েছে, ইমরান খানকে কোথাও স্থানান্তর করা হয়নি। তিনি আদিয়ালা জেলেই রয়েছেন এবং শারীরিকভাবে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। কারাগার কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আদিয়ালা জেল থেকে তার স্থানান্তর সংক্রান্ত খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি পুরোপুরি সুস্থ আছেন এবং পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন।’ খবর জিও নিউজের।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, কারাগারে ইমরান খানকে সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, তিনি কারাগারে থেকে যে সুবিধা পেতেন ইমরান খান এর চেয়েও বেশি পাচ্ছেন।
খাজা আসিফ আরও বলেন, তার জন্য যে খাবার আসে, সেটির মেন্যু দেখুন। এগুলো পাঁচ তারকা হোটেলেও নেই। কারাগারে তার কাছে টেলিভিশনও আছে। তিনি নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী যে কোনো চ্যানেল দেখতে পারেন। তার সঙ্গে ব্যায়ামের যন্ত্রাংশও আছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ডাবল বেডের ব্যবস্থাও করা হয়েছে বলে দাবি করেন আসিফ।
এর আগে চলতি বছরের মে মাসেও ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল। তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু পোস্টে দাবি করা হয়, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের ভেতর থেকে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তার বিরুদ্ধে বেশকিছু মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুয়েকটিতে সাজাও হয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর। সূত্র: দ্য ইকোনোমিক টাইমস।
আরও পড়ুন:
হংকংয়ে বহুতল ভবনে আগুনে নিহত বেড়ে ৪৪, নিখোঁজ ২৭৯
বিশ্বে প্রতি ১০ মিনিটে একজন নারী তার ঘনিষ্ঠজনের হাতে খুন হয়: জাতিসংঘ


