বিনোদন ডেস্ক: এবার অভিনেত্রী তানজিন তিশা বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছেন ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘ভালোবাসার মরশুম’-এর প্রযোজক।
কলকাতার নির্মাতা এম.এন রাজ পরিচালিত ‘ভালোবাসার মরশুম’–এ অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে অগ্রিম টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন শরীফ খান নামে এক ব্যক্তি, যিনি নিজেকে সিনেমাটির প্রযোজক দাবি করেছেন।
শরীফ খানের অভিযোগ, তিশার ‘অসহযোগিতার’ কারণেই তাকে সিনেমা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আর বাদ পড়ার পর অগ্রিম নেওয়া অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়েও টালবাহানা করছেন তিনি।
এ বিষয়ে প্রযোজক শরীফ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিশার অসহযোগিতা ও বারবার মিথ্যা বলার কারণে বাধ্য হয়ে তাকে সিনেমা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাদ পড়ার পরও তিনি অগ্রিম টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, “প্রথমে ৩০ হাজার রুপি অগ্রিম দিই। পরে তার বোনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশি ৪ লাখ ১২ হাজার টাকা পাঠানো হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় গড়িমসি।”
প্রযোজক অভিযোগ করেন, ভিসা স্লট, শুটিং শিডিউলসহ সবকিছু ঠিকঠাক করার পর স্লট ডেটের মাত্র দুই দিন আগে তিশা জানান—তিনি যেতে পারবেন না। তিনি বলেন, “ভারতের ভিসা স্লট পাওয়া কত কঠিন, তা সবার জানা। বহু ঝামেলা করে স্লট নেওয়ার পর তিনি এমন সিদ্ধান্ত জানান—যা ছিল মারাত্মক ক্ষতিকর।”
তিশার সিদ্ধান্তে শুটিং শিডিউল থেকে শুরু করে লোকেশন বুকিং—সবকিছুই এলোমেলো হয়ে যায়। এতে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় প্রযোজককে। পরিস্থিতি আরো জটিল হয়, যখন তিশা শাকিব খানের ‘সোলজার’ সিনেমায় যুক্ত হয়ে কলকাতার শুটিং পিছিয়ে দিতে চান।
প্রযোজক বলেন, “তিনি ফোন দিয়ে বলেন কলকাতার কাজ এক–দুই মাস পিছিয়ে দিতে। তখনই আমি তাকে জানাই—এ সিনেমায় আর কাজ করতে হবে না। শুধু টাকাটা ফেরত দাও।” কিন্তু এরপর থেকেই তিশা নীরব—অগ্রিম টাকা ফেরত দিচ্ছেন না বলেও দাবি তার।
এই সিনেমায় অভিনেতা খায়রুল বাসারেরও অভিনয় করার কথা ছিল। এ বিষয়ে প্রযোজক বলেন, “চরিত্রটি তার সঙ্গে যাবে না মনে করে বাসার নিজেই সরে দাঁড়ান এবং সঙ্গে সঙ্গে অগ্রিম টাকা ফেরত দেন। কোনো টালবাহানা করেননি।”
এদিকে এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ‘ফালতু’ বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন তানজিন তিশা। তাঁর কথায়, চুক্তির সময় এক-তৃতীয়াংশ পেমেন্ট পেয়েছিলেন তিনি। শুটিংয়ের ভিসা পাওয়ার অপেক্ষায় দেড়মাস শিডিউল ফাঁকা রেখে কোনো কাজ নেননি। চুক্তিতেই উল্লেখ ছিল—শুটিং বাতিল হলে এই অগ্রিম ফেরতযোগ্য নয়।
অভিনেত্রীর অভিযোগ, শরীফ নামে একজন মধ্যরাতে ফোনে কথা বলতে চান—‘এটা পেশাদার আচরণ হতে পারে না।’ তিশার দাবি, ওই ব্যক্তি সিনেমার প্রযোজকই নন।
তিশার আইনজীবী জসিম উদ্দিনও বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, তানজিন তিশা চুক্তি অনুযায়ী তাঁর সমস্ত দায়িত্ব পালন করেছেন। সময়মতো শিডিউল দিয়েছেন এবং কাজের জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু পরিচালক ভিসা ও শুটিং প্রস্তুতি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হন। চুক্তির ধারা অনুযায়ী এটা ডিরেক্টরের ডিফল্ট, আর্টিস্টের নয়। বরং ভিসা বিলম্ব ও শিডিউল বাস্তবায়ন না হওয়ায় তিশাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কয়েকদিন আগে অনলাইনভিত্তিক একটি ফ্যাশন হাউজ তার বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা করে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে এলো আরো গুরুতর অভিযোগ—অর্থ আত্মসাৎ ও চরম অপেশাদার আচরণের।
আরও পড়ুন:


