কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: আগামী রোববার (১৯ অক্টোবর) থেকে মেট্রোরেলে চলাচলের সময় এক ঘণ্টা বাড়ছে এবং আগামী মাসের মাঝামাঝি বাড়ানো হবে ট্রিপের সংখ্যাও। ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ-পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ডিএমটিসিএল জানিয়েছে, আগামী মাসের মাঝামাঝিতেই বাড়বে মেট্রোরেলের ট্রিপ সংখ্যা। ট্রিপ বাড়লে দুই ট্রেনের মধ্যে বিরতি অন্তত দুই মিনিট কমে যাবে।
জানা গেছে, মেট্রোরেলের সময় ও ট্রিপ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয় গত মাসে। এ লক্ষ্যে ২৫ সেপ্টেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে বাড়তি সময় চালানো হয়। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ডিএমটিসিএলের এক বৈঠকে প্রথম ধাপে প্রতিদিন এক ঘণ্টা বাড়তি সময় চালানোর সিদ্ধান্ত হয়।
বর্তমানে মেট্রোরেলে দৈনিক গড়ে সাড়ে চার লাখ যাত্রী চলাচল করেন। নতুন সূচি কার্যকর হলে যাত্রীসংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে ডিএমটিসিএল।
নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়বে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে (আগে ছিল সকাল ৭টা ১০ মিনিট)। আর সবশেষ ট্রেন ছাড়বে রাত সাড়ে ৯টায় (আগে ছিল রাত ৯টা)। অন্যদিকে মতিঝিল থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়বে সকাল ৭টায় (আগে ছিল সকাল সাড়ে ৭টা), আর সর্বশেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ১০টা ১০ মিনিটে (আগে ছিল রাত ৯টা ৪০ মিনিট)।
বর্তমানে শুক্রবার বেলা ৩টায় মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়, নতুন সূচিতে তা শুরু হবে বেলা আড়াইটায়। রাতেও চলাচলের সময় আধঘণ্টা বাড়বে।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে সেবা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এজন্য পর্যাপ্ত পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। আগামী রোববার থেকে দিনে এক ঘণ্টা বাড়তি সময় মেট্রোরেল চালানোর পরিকল্পনা আছে। ট্রিপ বাড়াতে আরও কিছুদিন পরীক্ষামূলক চলাচল করতে হবে। আশা করছি, নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে ট্রিপ বাড়ানো সম্ভব হবে।’
এছাড়া এখন শুক্রবার বেলা তিনটা থেকে মেট্রোরেলের চলাচল শুরু হয়। নতুন সূচিতে সময় আধঘণ্টা এগিয়ে বেলা আড়াইটায় চলাচল শুরু হবে। আর রাতে চলাচলের সময় বাড়বে আধা ঘণ্টা।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পথে চালানোর জন্য এখন ২৪ সেট ট্রেন আছে। প্রতি সেটে ছয়টি কোচ। বর্তমানে ১২ সেট ট্রেন সার্বক্ষণিক যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। বাড়তি সময়ে চালালে ও ট্রিপের সংখ্যা বাড়ালে সার্বক্ষণিক ১৯ সেট ট্রেন ব্যবহার করা হবে বলে জানায় ডিএমটিসিএল সূত্র।
দুই সেট ট্রেন সব সময় ওয়ার্কশপে রাখা হয়। এগুলো দিয়ে চালকের নানা পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। এ ছাড়া সকালে যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরুর আগে লাইন পরীক্ষার জন্য এক সেট ট্রেন যাত্রীবিহীন চালানো হয়।
একটি ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের সময়ের ব্যবধান (হেডওয়ে) কত মিনিট হবে, তা এখন তিনটি স্তরে ভাগ করা আছে। ব্যস্ত সময়ে (পিক আওয়ার) এক ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের ব্যবধান ছয় মিনিট। অর্থাৎ ব্যস্ত সময়ে প্রতি ছয় মিনিট পরপর ট্রেন আসে।
কম ব্যস্ত সময়ে (অফ-পিক আওয়ার) প্রতিটি ট্রেনের সময়ের ব্যবধান ৮ মিনিট। আর একেবারেই কম ব্যস্ত সময়ে (সুপার অফ পিক আওয়ার) ১০ মিনিট ব্যবধানে ট্রেন চলাচল করে।
বর্তমানে সারা দিনে ২৩৮ বার মেট্রোরেল যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। এক ট্রেনের সঙ্গে অন্য ট্রেনের সময়ের ব্যবধান কমে গেলে ট্রিপের সংখ্যা বাড়বে। তখন যাত্রীদের অপেক্ষার সময় আরও কমবে। অর্থাৎ আরও দ্রুত ট্রেন পাওয়া যাবে।
২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়। শুরুতে চলাচল করত উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। পর্যায়ক্রমে স্টেশনের সংখ্যা বাড়ে। মতিঝিল পর্যন্ত সব স্টেশনে যাত্রী ওঠানামা শুরু হয় ২০২৩ সালের শেষ দিনে। এখন কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল সম্প্রসারণের কাজ চলছে।


