কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: অসদাচরণের অভিযোগে করা মামলায় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিকে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) বিভাগীয় মামলায় তাকে ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ গুরুদণ্ড দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
তাপসী তাবাসসুমকে চাকরিচ্যুতির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, গত বছরের ৬ অক্টোবর তিনি নিজ ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার ও প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ এর বিধি ৩(খ) মোতাবেক ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে বিভাগীয় মামলা হয়। এরপর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি নিরাপত্তার কারণে ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ না নিয়ে লিখিতভাবে জবাব দেন। তার জবাব গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তাকে গুরুদণ্ড দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়। এরপর তাকে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন, দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাব, পারিপার্শ্বিকতা এবং বিভাগীয় মামলার নথি পর্যালোচনা তার বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বিধিমালা অনুযায়ী ‘চাকরি হতে বরখাস্তকরণ’ সূচক গুরুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনও গুরুদণ্ড দিতে কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করে পরামর্শ দেয়। রাষ্ট্রপতিও তাকে চাকরিচ্যুতির গুরুদণ্ড দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৬ অক্টোবর তাপসী তাবাসসুম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাসে লেখেন, সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ! কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।
এছাড়াও, তিনি সামাজিক মাধ্যমে শহিদ আবু সাঈদ ও তৎকালীন ছাত্র-জনতার আন্দোলন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে বেশকিছু পোস্ট দেন, যা প্রশাসনের দৃষ্টিতে রাষ্ট্রবিরোধী এবং আচরণগতভাবে অগ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়।
তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে তিনি নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে লিখিত জবাব দেন, যা কর্তৃপক্ষের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের পর তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়।
এরপর তাকে দ্বিতীয় দফায় কারণ দর্শানোর সুযোগ দেয়া হলেও তদন্ত প্রতিবেদন ও সকল বিবেচনায় তার বিরুদ্ধে গুরুদণ্ড প্রয়োগের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনও কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করে পরামর্শ দিয়েছে এবং রাষ্ট্রপতিও তার চাকরিচ্যুতির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছেন বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।




