ময়মনসিংহ ব্যুরো: ময়মনসিংহ নগরীতে বাসায় ঢুকে সাবেক স্ত্রী রওশন আক্তার (৪২) নামের এক নারীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর তাঁর সাবেক স্বামী পাশের কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আত্মহত্যার আগে রাকিবুল করিম (৫০) নামের ওই ব্যক্তি নিজের জমিজমার দলিলপত্র তাঁর মেয়েকে বুঝিয়ে দেন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই)ভোরে নগরের গুলকীবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ দু’জনেরই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, গুলকীবাড়ি এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় মেয়েকে নিয়ে থাকতেন রওশন আক্তার (৪২)। তাঁর বাবার বাড়ি নেত্রকোণা সদর উপজেলার রাজুর বাজার এলাকায়। তিন মাস আগে নগরের সেনবাড়ি এলাকার ওমান প্রবাসী রাকিবুল করিম (৫০) সঙ্গে তাঁর বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। তাঁদের দু’টি কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ও ছোট মেয়ে ময়মনসিংহ নগরের ক্যান্টনমেন্ট কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ে। পারিবারিক কলহের জেরে রাকিবুলকে মাস তিনেক আগে তাঁর স্ত্রী তালাক দেন।
মঙ্গলবার ভোরে রওশন আক্তারের ভাড়া বাসায় ঢুকে তাঁকে ছুরিকাঘাত শুরু করেন রাকিবুল। মাকে ছুরিকাঘাত করতে দেখে ছোট মেয়ে ভয় পেয়ে অন্য একটি কক্ষে আশ্রয় নেয়। রওশন আক্তারকে হত্যার পর রাকিবুল বাসার অপর একটি কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ দু’টি মরদেহ উদ্ধার করে।
রওশন আক্তারের ভাতিজা ইকবাল হোসেন শাওন বলেন, ‘পারিবারিক কলহের জের ধরে দু’জনের বিচ্ছেদ হয়েছে মাস তিনেক আগে। কিন্তু সকালে রওশন আক্তারের ভাড়া বাসায় ঢুকে রাকিবুল তাঁকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে মেয়েকে বেঁধে রেখে অন্য একটি কক্ষে গিয়ে দরজা লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে নেত্রকোণা থেকে ছুটে এসে লাশ দেখতে পাই।’
বাড়িটির দায়িত্বে থাকা রকিবুল ইসলাম লিটন বলেন, ‘১০-১২ বছর আগে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে আসছিল রওশন আক্তার ও তার মেয়েরা। তবে বড় মেয়ে ঢাকায় থাকতেন। তাঁদের চালচলন ভালোই ছিল। কিন্তু হঠাৎ এমন ঘটনা ঘটবে, ভাবতে পারিনি।’
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গত ২৪ জুন ওমান থেকে দেশে আসেন রাকিবুল করিম। প্রায় তিন মাস আগে স্ত্রী রওশন আক্তার তাঁকে তালাক দেন। আজ বাসায় ঢুকে প্রথমে স্ত্রীকে হত্যা করেন। তারপর নিজের জমিজমার দলিলপত্র মেয়েকে বুঝিয়ে দিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেন। ঘটনায় অন্য কোনো কারণ আছে কি না, আমরা খতিয়ে দেখছি। তাঁদের লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।


