অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক: আগামী ৬ মাসের জন্য সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন মুনাফার হার আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) থেকে কার্যকর হবে।
সোমবার (৩০ জুন) জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত পাঁচটি সঞ্চয় কর্মসূচির মুনাফার হার কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে সঞ্চয়পত্রে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন সুদহার হবে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। আগে যেখানে পাঁচ ধরনের সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার ১২ শতাংশের ওপরে ছিল, সেখানে এবার প্রায় সব ক্ষেত্রেই হার কমানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা তার কম বিনিয়োগে তুলনামূলক বেশি মুনাফা পাওয়া যাবে। এর বেশি বিনিয়োগে মুনাফার হার আরও কমে যাবে। সরকার আয় ও ঋণ ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে নিয়মিতভাবে সঞ্চয়পত্রের সুদহার নির্ধারণ করে থাকে।
এদিকে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা না বাড়ানোর পর এবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হারও কমানো হলো। ফলে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে মধ্যবিত্ত ও নির্ভরশীল শ্রেণির ওপর আর্থিক চাপ আরও বাড়বে। বিশেষ করে যাদের পরিবারের বড় অংশের খরচ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর নির্ভরশীল, তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
কোন সঞ্চয়পত্রে কত মুনাফা?
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকা বা এর কম বিনিয়োগকারীদের মুনাফার হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। এতদিন যা ছিল ১২ দশমিক ৪০ শতাংশ। এর বেশি অঙ্কের বিনিয়োগকারীদের মুনাফা দাঁড়াবে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ৷ আগে যা ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এক্ষেত্রে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতর্থ বছর শেষে মুনাফা যথাক্রমে আরও কম পাওয়া যাবে।
পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ মুনাফার হার পাওয়া যাবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। আগে যা ছিল ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর সাড়ে সাত লাখ টাকর বেশি বিনিয়োগে মুনাফা হবে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ, আগে যা ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বছর শেষে মুনাফা যথাক্রমে আরও কম পাওয়া যাবে।
পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ মুনাফা হার পাওয়া যাবে ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ; আগে যা ছিল ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ। এর বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফা হবে হবে ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ; আগে যা ছিল ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বছর শেষে মুনাফা যথাক্রমে আরও কম পাওয়া যাবে।
এ ছাড়া তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক মেয়াদি হিসাবে সাড়ে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ মুনাফা পাওয়া যাবে ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ; যা এতদিন ছিল ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর বেশি বিনিয়োগে মুনাফা হবে ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ; আগে যা ছিল ১২ দশমিক ২৫ শতাংশ।
তবে, কিছু ক্ষেত্রে হার অপরিবর্তিত থাকবে। যেমন- জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের আওতায় ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাবের মুনাফার হার অপরিবর্তিত থাকবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ১ জুলাই ২০২৫-এর আগে ইস্যু হওয়া সব জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের ক্ষেত্রে ইস্যুকালীন মেয়াদের মুনাফার হারই প্রযোজ্য হবে। তবে পুনর্বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন মুনাফার হার কার্যকর হবে। ছয় মাস পর আবারও মুনাফার হার পুনর্নির্ধারণ করা হবে।




