সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে হঠাৎ করে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। এতে প্লাবিত হচ্ছে জেলার বিভিন্ন ফসলি জমি ও নিম্নাঞ্চল। বিশেষ করে চলনবিল অধ্যুষিত এলাকায় দেরিতে রোপণ করা বোরো ধান ডুবে গিয়ে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
শুক্রবার (৬ জুন) সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টে যমুনার পানি গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ৩৭ সেন্টিমিটার। পানির বর্তমান উচ্চতা ১২ দশমিক ২৭ মিটার, যা এখনও বিপৎসীমার (১২.৯০ মিটার) নিচে থাকলেও বৃদ্ধির গতি উদ্বেগজনক।
অপরদিকে, কাজিপুর উপজেলার মেঘাই ঘাট পয়েন্টে একই সময়ে পানি বেড়েছে ৪০ সেন্টিমিটার, যার উচ্চতা এখন ১৩ দশমিক ৯৫ মিটার। এটি বিপৎসীমার তুলনায় ৮৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও দ্রুত বাড়তে থাকায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
পাঁচ দিনে পানি বেড়েছে প্রায় ৩ মিটার
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ দিনে যমুনা নদীর পানি হার্ড পয়েন্টে বেড়েছে ২৮৭ সেন্টিমিটার এবং মেঘাই ঘাটে ৩০৪ সেন্টিমিটার। ফলে জেলার উল্লাপাড়া, তাড়াশ, শাহজাদপুর ও চৌহালীর অনেক ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।
বিশেষ করে চলনবিল ও চরাঞ্চলের দেরিতে রোপণ করা বোরো ধান ডুবে গেছে, যার কারণে ব্যাপক ফসলহানির শঙ্কা করছেন কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি বিভাগ যা বলছে
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুল হোসাইন বলেন,
“উজান থেকে পাহাড়ি ঢল ও স্থানীয় বৃষ্টির কারণে পানি বাড়ছে। আরও এক-দুইদিন এই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর থেকে পানি কমতে শুরু করবে।”
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আহসান শহীদ সরকার বলেন,
“অস্বাভাবিক হারে পানি বাড়ার ফলে তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুরের চলনবিলসহ চরাঞ্চলের অনেক ধানক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। এখনো ক্ষয়ক্ষতির নির্ভুল হিসাব পাওয়া যায়নি, তবে ক্ষতির মাত্রা অনেক।”
কৃষকদের মুখে উদ্বেগ
জেলা কৃষকদের অনেকেই জানিয়েছেন, শ্রম ও অর্থ ব্যয় করে চাষ করা বোরো ধান পানিতে ডুবে যাওয়ায় তারা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। পানি দ্রুত না কমলে ফলনের কোনো সুযোগ থাকবে না বলে আশঙ্কা করছেন তারা।


