কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও মোহনা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ মজুমদার আদালতকে বলেন, ‘আমার ৭৬ বছর বয়স। আমার চোখে সমস্যা। ৭০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। আমার পরিবার সম্পর্কে কোনো খোঁজ-খবর নিতে পারছি না। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনীতি করব না। রাজনীতি থেকে ইস্তফা দিলাম। আমি আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। এখন থেকে প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও পদত্যাগ করলাম।’
সোমবার (৩ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্রের আদালতে গ্রেফতার শুনানি শেষে তিনি এ কথা বলেন।
এদিন কামাল আহমেদ মজুমদারসহ ছয়জনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। সকাল ১০টার দিকে পুলিশ প্রহরায় তাদের হাজতখানা থেকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। ১০টা ৭ মিনিটে এজলাসে আসেন বিচারক। এরপর কাফরুল থানার মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর শুনানি শুরু হয়।
শুনানির এক পর্যায়ে কামাল আহমেদ মজুমদার কথা বলার জন্য হাত তোলেন। তখন বিচারক এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। পরে বিচারক তাকে কথা বলার অনুমতি দেন।
এ সময় সাবেক শিল্পপ্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনার (বিচারক) কাছে আমার আবেদন, আপনার কাছে সুবিচার চাই। একের পর এক মামলা দিয়ে আমাকে অত্যাচার করা হচ্ছে। এখন আমার নাতি-নাতনিদের নিয়ে খেলা করার সময়। কিন্তু জেলখানায় অত্যাচার করা হচ্ছে। এখন আল্লাহকে ডাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে ডিজিটাল কুরআন ও ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দিচ্ছে না। আমাকে ডিজিটাল কুরআন, ডায়াবেটিসের ওষুধ ও ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দেওয়া হোক। এসব কথা বলতে গিয়ে একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কামাল মজুমদার।
শুনানি কার্যক্রম শেষে কাঠগড়া থেকে নামার সময় কামাল আহমেদ মজুমদার সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতি থেকে একেবারে অব্যাহতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি। আমার দলীয় কোনো পদ নেই। ৭৬ বছর বয়সে রাজনীতি করা যায় না। আমরা চাই, নতুন নেতৃত্ব আসুক।
এরপর তাকেসহ অন্যান্য আসামিদের সিএমএম আদালতের হাজতখানায় প্রবেশ করানো হয়।
এ সময় বিচারক বলেন, আপনার সবগুলো দাবি আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করুন। এরপর বিচারক তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
নথি থেকে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই বিকেলে রাজধানীর কাফরুল থানাধীন বিআরটিএ অফিসের পেছনের রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হন আতিকুল ইসলাম। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ২৩ ডিসেম্বর ব্যবসায়ী আহসান হাবীব রাজধানীর কাফরুল থানায় একটা হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় কামাল মজুমদার ১০ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি।
একই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক দুই আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও এ কে এম শহীদুল হককে।