দুই পা হারানো সাঈদ টানেন সংসারের ঘানি, সহায়তা চাইলেন সমাজের বিত্তবানদের নিকট

Posted on January 30, 2025

বগুড়া প্রতিনিধি: সুস্থ থেকেই সংসারের হাল ধরতে হিমসিম খান মানুষ। অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে বেঁচে নেয় আত্মহত্যার পথ। কিন্তু অদম্য ইচ্ছা শক্তি থেকে প্রায় একুশ বছর আগে দুই পা হারিয়েন। তবুও সংসারের ঘানি টানছেন। বলছি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার আবু সাইদ এর কথা। তিনি নন্দীগ্রাম উপজেলার ৩নং ভাটরা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পন্ডিতপুকুর এলাকার মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে।

কথা হয় আবু সাঈদ এর সঙ্গে তিনি জানান, গত ২৯ বছর ধরে বসবাস করতেন অন্যের ভাড়া বাড়িতে। জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস ছিল বাসের ড্রাইভারি। ভাড়া বাড়িতে থেকে স্ত্রী এবং এক ছেলেকে নিয়ে বেশ চলছিল আবু সাঈদের ছোট্ট সাজানো সংসার। ২০০৩ সালে একদিন হঠাৎ আচমকা ঝড় এসে ভেঙে যায় আবু সাঈদ এর সাজানো সংসার। গোবিন্দগঞ্জ জেলার কমলপুরে বাস চালাতে গিয়ে রোড এক্সিডেন্টে দুই-পা হারিয়ে থেমে যায় আবু সাঈদের জীবন পথ।
আবু সাঈদের চিকিৎসার জন্য তার পরিবারকে মানুষের দুয়ারে যেতে হয়। থাকার শেষ সম্বল টুকু বিক্রি করে এমনকি সহযোগিতার সর্বমোট ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয় করেও সুস্থ জীবনে ফিরতে পারেনি আবু সাঈদ। দুই পা হারিয়ে ঋনগ্রস্থ হয়ে পরে পরিবার। পরিবারে লোকজনের মুখে দু-বেলা দু-মুঠো খাবার তুলে দিতে আবারো জীবন যুদ্ধে নেমে পড়েন। মাত্র ৩ হাজার টাকা মাসে ছোট্ট একটি খাবার হোটেল ভাড়া নিয়ে চলছে তার জীবন।

হোটেলে গিয়ে দেখা যায়, মা থালা বাসন পরিস্কার করছেন, ছেলে খাবার পরিবেশন করছেন, সাঈদ কাটা দু-পা নিয়ে অন্য কাজ করছেন। কথা হয় তার সঙ্গে। তার করুন জীবন কাহিনীর কথা বলতেই কান্নাই ভেঙে পড়ে আবু সাঈদ। নিজের অসুস্থ জীবন এক সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে একটু একটু করে টাকা জমিয়ে কোন মত ৩ শতক জায়গা কিনে সেখানে টিনের ছাউনি তুলে জীবন যাপন করছে পরিবার নিয়ে।

শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া সরকারি আর কোন আর্থিক সহায়তা মেলেনি তার কপালে। সমাজের বিত্তবানদের নিকট ও সরকারি সহায়তা পাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান অসহায় সাঈদের পরিবার।