কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের মধ্য থেকে প্রথম ১শ’ জনকে পুলিশের চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের বিশেষ শাখা এসবি ও সিআইডির প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনেকে নিহত এবং আহত হয়েছে। যারা আহত হয়েছেন তাদের কর্মসংস্থানের একটা ব্যবস্থা কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আহতদের পুলিশে চাকরি দেওয়ার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আপাতত ১০০ জনকে দিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি, পরবর্তী সময়ে আমরা এই সংখ্যাটা আরও বাড়াব।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আহতদের স্বচ্ছলতায় ফেরাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যারা আহত হয়েছেন, সবাইকে তো সব জায়গায় দেওয়া সম্ভব না। আমাদের প্রস্তাবে যাকে যেখানে সম্ভব, সেখানে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আপাতত পুলিশ বিভাগ দিয়ে শুরু করছি, পরবর্তী সময়ে মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সব ডিপার্টমেন্টে এটা করা হবে।
অর্থপাচারকে আগের সরকারের সময়ের সবচেয়ে বড় সংকট আখ্যায়িত করে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার সবচেয়ে বেশি মানি লন্ডারিং করেছে।’
মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেবেন—প্রশ্নে জাহাঙ্গীর আলম বলেন বলেন, বিগত সরকারের আমলে সব থেকে বড় সমস্যা ছিল মানিলন্ডারিং। এটা নিয়ে আমি সিআইডি প্রধানকে ইন্সট্রাকশন দিয়েছি। বলেছি, দ্রুত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনার প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য।
যানযটের সমস্যা নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, যানযট দূর করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একার দায়িত্ব না। আমরা তারপরও এক হাজার শিক্ষার্থী দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি। তাদেরকে আমরা মিনিমাম একটা পারিশ্রমিক দেব। শুরুতে ইচ্ছে ছিলো ৫০০ জন নিয়ে কাজ করব। তবে সে পরিমাণ লোকবল পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার সঙ্গে ট্রাফিকিংয়ের বিষয়টা কেমন হবে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারা যেন পড়াশোনা ঠিক রাখতে পারে সেজন্য তাদের আমরা সময়টা কম দিয়েছি। তারা যেন পড়াশোনাও করতে পারে এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছি। একটা সম্মাননিও দেওয়া হচ্ছে। রাস্তায় তারা ২-৩ ঘণ্টা কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আরও একটি প্রপোজাল পাঠিয়েছিলাম যে বিভিন্ন বাহিনীতে যারা অবসরে গিয়েছেন তাদের নিয়োগ দিয়ে ট্রাফিক শৃঙ্খলায় নিয়োজিত করা। তবে অবসরপ্রাপ্তরা এই বিষয়ে রেসপন্স খুব কম দিয়েছেন। আমি ভেবেছিলাম তারা অনেকে আসতে চাইবে, কিন্তু ওই রকম সংখ্যা আমরা পাইনি। তবে আমরা আপাতত ৫০-৬০ জনের মতো পেয়েছি। তবে চেয়েছিলাম অন্তত ৫০০ জন দিয়ে শুরু করি।
অন্তবর্তী সরকারের দায়িত্ব পালনের পাঁচ মাস হয়েছে, এখন পর্যন্ত কী ধরনের উন্নতি আপনারা করেছেন, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা মিলিয়ে দেখেন, আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে কি না। পুলিশ তাদের কাজ শুরু করেছে। পুলিশ এখন একটু সময় নিয়ে কাজ করছে। রাস্তাঘাট চিনতে সময় লাগছে তাদের। গাড়ি নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। আমরা এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
পাঁচ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের পরে অনেকে পালিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে আপনারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘৫-৬ আগস্ট কোনো সরকারই ছিল না। তখন অনেকে পালিয়ে গেছেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশে চলে গেছেন অনেকে। তখন তো আমরা ছিলাম না। তবে আমরা সরকারে আসার পর কেউ পালিয়ে গেছে কিনা; সেটা বলেন। এরপরও যদি কেউ গিয়ে থাকেন, আমরা বিষয়টি দেখব।’