কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করেছে সরকার। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গেজেট আকারে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কোঅপ্ট করতে (বাড়াতে) পারবে। প্রয়োজন অনুসারে কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের তথ্য ছাপে একটি সংবাদপত্র। গত ৩ অক্টোবর পত্রিকাটিতে ‘আমার 5C হলেই চলবে, স্যার 10C রাখব’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটিতে বলা হয়েছে— ডিসি নিয়োগে আর্থিক লেনদেনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং দুই যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আলী আযম জড়িত। মোখলেস উর রহমান ও আলী আযমের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের বেশকিছু তথ্যও তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনটিতে।
তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক না বলে দাবি করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান।বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, আমার মোবাইল হলো স্যামসাং। তারা যে স্ক্রিনশট প্রকাশ করা করেছে সেটি হলো আইফোনের। আইফোন কি আমি ব্যবহার করি? আমি ব্যবহার করি স্যামসাং। উনারা কে কি দেখাল ওনাদের জিজ্ঞেস করবেন। আমি এটার বিষয়ে কিছুই জানি না।
যে খবর প্রকাশিত হয়েছে সেটা নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ, সরকার যে টেলিফোন (মুঠোফোন) দিয়েছে সেটাও আমি ব্যবহার করি না। আপনারা যারা জানেন, আমার আগের যে নম্বর, সেটিই আমি ব্যবহার করতেছি সরকারিভাবে।
এই খবরের সত্যতা আছে কি না, আপনি পদত্যাগ করবেন কি না—এ বিষয়ে তিনি বলেন, আপনারা যদি নিউজ করতে চান, স্ট্যান্ডবাজি নিউজ করতে চান, তাহলে এ প্রশ্ন করতে পারেন। এতদিন আমার সঙ্গে কাজ করেছেন, বিন্দু-বিসর্গ যেখানে সত্যতা নেই। এই প্রশ্ন করার আগে আপনারা নিজেকে প্রশ্ন করেন, কতটুকু যৌক্তিক হচ্ছে আমাকে এই প্রশ্ন করা?
আপনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সরকারের কাছে আপনি আহ্বান জানাবেন কি না, জানতে চাইলে মোখলেস উর রহমান বলেন, অভিযোগটা যিনি করেছেন এই অভিযোগকারী আমার কাছে কোনো বিবেচনায় নেই। এই অভিযোগটি আমি মূল্যহীন মনে করি। এটা ভুয়া নিউজ।
খবর যদি মিথ্যা হয়, তাহলে কী ব্যবস্থা নেবেন– সেই প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা তিনটি পদক্ষেপ নিয়েছি। পত্রিকটির নাম উল্লেখ করে আমরা তথ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছি। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারি চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রেস কাউন্সিল আছে, অন্যান্য যে নিয়ম কানুন আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“যে ভুয়া লোককে কেন্দ্র করে এতকিছু, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী এক দুই দিনের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। যে ব্যাংকারের ভুলের কারণে এ ধরনের একটা অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”