কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) সরিয়ে দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন টাস্কফোর্সকে তদন্ত এবং আগামী ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেন।
হাইকোর্ট বলেছেন, এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার থেকে র্যাবকে সরানো হলো। এটি পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে, বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞ, যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তদন্ত করাতে পারবে সরকার।
এদিকে আজ সকালে সাংবাদিক দম্পতি সাগর ও রুনি হত্যার মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে র্যাবকে সরিয়ে দিতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করা হয়।
এর আগে, রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাগর-রুনি হত্যা মামলায় প্রথমবারের মতো আইনজীবী শিশির মনিরকে নিয়োগ করেন মামলার বাদী ও রুনির ভাই নওশের আলী রোমান।
নতুন নিয়োগ পাওয়া আইনজীবী শিশির মনির জানান, আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ক্রিমিনাল মামলার বিচারের দায়িত্ব কিন্তু রাষ্ট্রের। কিন্তু আইনে আছে কোনো ভুক্তভোগী কিংবা অভিযোগকারী চাইলেও ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৩ ধারা অনুযায়ী স্বাধীন আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। এভাবে সাগর-রুনি মামলার যিনি অভিযোগকারী ছিলেন তিনি আমাকে নিযুক্ত করেছেন। আমরা নিম্ন আদালতে দরখাস্ত দায়ের করব। তদন্ত যারা করছে তাদের সঙ্গে বসব। যেসব ক্লু আছে সেগুলো ধরে পরবর্তী তদন্ত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে খুন হন সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সাগর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা টিভিতে এবং রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন। হত্যার দিন সাংবাদিক দম্পতির ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ সেই সময় বাসায় ছিল। তখন তার বয়স ছিল পাঁচ বছর।
পরে ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান বাদী হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে মামলাটির তদন্ত করেন শেরেবাংলা নগর থানার একজন কর্মকর্তা। এরপর ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত ভার পড়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরের পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর।
২ মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব)। সেই থেকে প্রায় ১২ বছরে ১১১ বার সময় নিয়েও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।
অথচ এ হত্যার পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের রহস্য উন্মোচন করে তা জাতির সামনে প্রকাশ করা হবে। কিন্তু এক যুগেও সে রহস্য উন্মোচন আলোর মুখ দেখেনি।
আরও পড়ুন:
শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার