স্পোর্টস ডেস্ক : গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন ফুটবলের মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথম ও একমাত্র ফুটবলার হিসেবে ২০০তম ম্যাচ খেলে অনন্য এক রেকর্ডের মালিক হলেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী।
মঙ্গলবার রাতে ইউরো-২০২৪ বাছাইয়ে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল পর্তুগাল। খেলার প্রায় শেষদিকে সিআর সেভেনের করা গোলেই ১-০তে জয় পায় পর্তুগাল। প্রথমে সেটি অফসাউডে বাতিল করা হলেও ভিএআরের মাধ্যমে গোল রাখার সিদ্ধান্ত আসে।
পুরুষদের সর্বোচ্চ ১৯৬ ম্যাচ খেলার আগের রেকর্ডটি ছিল কুয়েতের বাদের আল মুতাওয়ার। গত মার্চে সেই রেকর্ড ছাড়িয়েছেন রোনালদো। এই ম্যাচে নামার পর নিজের রেকর্ডকে আরও সমৃদ্ধ করলেন সিআরসেভেন। তাই কীর্তিটির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের সনদ তুলে দেওয়া হয় রোনালদোর হাতে।
ম্যাচের পর রোনালদো বলেন, ‘আমার জন্য এটা অবিশ্বাস্য একটি অর্জন, এটা অসাধারণ। এবং শেষ মূহূর্তের জয়সূচক গোল, এটি আরও বিশেষকিছু।’
‘আমরা খুব একটা ভালো খেলিনি। কিন্তু মাঝে মাঝে ফুটবল এমনই এবং আমরা একটি গোল করেছিলাম, আমার মনে হয়েছে আমাদের এটা প্রাপ্য ছিল। ২০০তম ম্যাচে অধিনায়কত্ব করতে পেরে আমি খুশি, কিন্তু গোল সেটা আরও বিশেষ কিছু।’
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে পর্তুগাল। যার ফলে ম্যাচের প্রথম ১৫ মিনিটেই পাঁচটি কর্নার আদায় করে নেয় সফরকারীরা। শেষ কর্নার কিক থেকে এগিয়েও যেতে পারত দলটি; তবে পেপের লাফিয়ে উঠে নেওয়া হেড ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন আইসল্যান্ডের গোলরক্ষক।
অবশ্য পরে শুরুর চাপ ধরে রাখতে পারেনি পর্তুগাল। বরং বল দখলে অনেক পিছিয়ে থাকলেও পাল্টা আক্রমণে মাঝে মধ্যে ভীতি ছড়াতে থাকে আইসল্যান্ড। ফলে ২৪তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগও পায় স্বাগতিকরা। তবে গোলবার ফাঁকায় পেয়েও ক্রসবারের ওপর দিয়ে শট মারেন মিডফিল্ডার ভিক্তর পলসন।
প্রথমার্ধের এক মিনিট যোগ করা সময়ে হেড করতে গিয়ে পেপেকে আইসল্যান্ডের ফরোয়ার্ড আলফ্রেদ কনুই মারলে মাঠে উত্তেজনা ছড়ায়। লাল কার্ড দেখানোর দাবি তোলেন পর্তুগালের খেলোয়াড়রা; রেফারি অবশ্য হলুদ কার্ডই দেখান। রেফারির সিদ্ধান্ত যে মোটেও পছন্দ হয়নি, তা রোনালদোর চোখেমুখে ছিল স্পষ্ট।
৬৯তম মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো থ্রু বল ধরে বক্সে ঢুকে ক্রসবারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন রোনালদো। অবশ্য বল জালে জড়ালেও মিলত না গোল, অফসাইডে ছিলেন তিনি। ৮০তম মিনিটে গনসালো ইনাসিওকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন আইসল্যান্ডের মিডফিল্ডার ভিলাম।
এর ৯ মিনিট পরই কাঙ্ক্ষিত গোলটি পেয়ে যায় পর্তুগাল। ইনাসিওর হেডে বাড়ানো বল ছয় গজ বক্সে পেয়ে দুরূহ কোণ থেকে ডান পায়ের শটে জালে পাঠান রোনালদো। সঙ্গে সঙ্গে অফসাইডের পতাকা তোলেন লাইন্সম্যান। দীর্ঘক্ষণ সময় নিয়ে ভিএআরে যাচাই শেষে গোলের বাঁশি বাজান রেফারি।
আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ ম্যাচ ও গোলের রেকর্ড আগে থেকেই রোনালদোর। এবার তা আরও বাড়িয়ে নিলেন তিনি। এখন পর্যন্ত ২০০ ম্যাচে তার গোলের সংখ্যা দাঁড়াল ১২৩টিতে। এবার বাছাইপর্বে ‘জে’ গ্রুপে চার ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে আছে পর্তুগিজরা।
২০০৩ সালে অভিষেক হওয়া রোনালদো ২০ বছর ধরে খেলছেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ, জুভেন্টাসসহ ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবে খেলা সিআর সেভেন পাঁচটি ব্যালন ডি’অর জিতেছেন। সবশেষ সৌদি আরবের আল নাসেরে নাম লিখিয়েছেন।
আরও পড়ুন:
ব্রাজিলকে ৪ গোলে উড়িয়ে দিয়ে সেনেগালের স্মরণীয় জয়