নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জ ও দিনাজপুরে একাধিক শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে মো. ইনজামুল ইসলাম (২৬) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, ওই যুবক যৌন নিপীড়নের দৃশ্য নিজের মোবাইল ফোনে ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে সেগুলো ফোনের স্টোরেজ ও গুগল ড্রাইভে সংরক্ষণ করে রাখতেন।
সম্প্রতি ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেনকে (এনসিএমইসি) এ তথ্য জানায়। এরপর এনসিএমইসি সেটি বাংলাদেশ পুলিশ সদরদপ্তরে জানালে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) বিষয়টি পর্যবেক্ষণ এবং অনুসন্ধান শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযুক্ত ইনজামুলকে শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়।
গত বুধবার (৩১ মে) সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্টের একটি বিশেষ টিম গাজীপুরের জয়দেবপুর থানাধীন ভবানীপুরস্থ বানিয়ার চালা এলাকা থেকে অভিযুক্ত ইনজামুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকেলে এ তথ্য জানান সিআইডির মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান।
তিনি জানান, গ্রেফতার ইনজামুলকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, যৌন নিপীড়নের শিকার শিশুগুলো তার কাছের আত্মীয়। ২০১৯ সালে তিনি এক নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে প্রথম শারীরিক সম্পর্ক করেন। এক পর্যায়ে ওই আত্মীয়ের মেয়ে তাদের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলে। পরে ওই মেয়েকেও (১০) বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন এবং নগ্ন ভিডিও ধারণ করেন ইনজামুল।
নিকটাত্মীয়ের মেয়েকে আরও প্রলোভন দেখিয়ে তার অন্য বান্ধবীকে এনে যৌন নিপীড়ন করার পাশাপাশি তাদের যৌন নিপীড়নের ছবি ও ভিডিও ধারণ এবং সেগুলো তার মোবাইল ফোনের স্টোরেজ ও গুগল ড্রাইভে সংরক্ষণ করে রাখেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতারকালে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে তার অন্য নিকটাত্মীয়সহ অনেকের নগ্ন ছবি, ভিডিও এবং শিশু পর্নোগ্রাফির প্রচুর কন্টেন্ট পাওয়া যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তি শিশু যৌন নিপীড়নের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি গ্রামের শিশু-কিশোরী এবং প্রাপ্তবযয়স্ক নারীদের সঙ্গে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং পরে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে তাদের ভিডিও কনটেন্ট গুগল ড্রাইভে সংরক্ষণ করতেন।
গ্রেফতার ব্যক্তির বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়েছে বলে জানায় সিআইডি।
ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়টেড চিলড্রেন শিশু যৌন নির্যাতন বন্ধ, শিশু পর্নোগ্রাফি নির্মূলসহ শিশুদের অধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধন করা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ফেসবুক, গুগল, মাইক্রোসফট তাদের নেটওয়ার্কে শিশুদের যৌনকাজে ব্যবহার, যৌন নিপীড়ন সংক্রাস্ত বিভিন্ন তথ্য এনসিএমইসিকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জানায়। ২০২১ সাল থেকে এনসিএমইসির সঙ্গে যুক্ত হয় সিআইডি। সেখান থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে শিশু যৌন নিপীড়নকারী শনাক্তকরণসহ আইনানুগ সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় সিআইডি।