নিজস্ব প্রতিবেদক : নাশকতার মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের হাইকোর্টের দেওয়া ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার জজ আদালত।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত তাদের জামিন স্থগিত করেন।
আগামী রোববার (৮ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে। ফলে রোববার পর্যন্ত কারাগারে থাকতে হবে ২ নেতাকে।
আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ফখরুল ও আব্বাসের জামিননামা দাখিল করতে পারবেন না মর্মেও আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে বুধবার সকালে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদনটি দায়ের করে রাষ্ট্রপক্ষ।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর গণমাধ্যমকে জানান, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন, তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ৬ মাসের জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কেন তাদের স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। এদিন দুপুরে এই আদেশ দেন বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে আসামিদের জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও আইনজীবী সগীর হোসেন লিওন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম গোলাম মোস্তফা।
সোমবার (২ জানুয়ারি) আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন।
এর আগে, বিএনপির এই দুই নেতার জামিন আবেদন তিনবার নাকচ করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত।
গত ২১ ডিসেম্বর বিচারিক আদালতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ। কিন্তু ওই আদেশের সার্টিফাইট কপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনজীবীর হাতে না পাওয়ায় এতোদিন উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করতে পারেননি বিএনপির এ দুই শীর্ষ নেতা।
রোববার (১ জানুয়ারি) ওই আদেশের সার্টিফাইট কপি হাতে পাওয়ার পর আজ উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করলেন ফখরুল-আব্বাসের আইনজীবী।
উল্লেখ্য, গত ৭ ডিসেম্বর বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। আহত হন অনেকে। এসময় বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল-ডাল, পানি, নগদ টাকা ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া যায় বলে দাবি করে পুলিশ।
এ ঘটনায় গত ৮ ডিসেম্বর দিনগত রাতে নিজ বাসা থেকে ফখরুল ও আব্বাসকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরদিন ৯ ডিসেম্বর পুলিশ তাদের আদালতে হাজির করে। এসময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতার বিএনপি নেতাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।