তিমির বনিক, ষ্টাফ রিপোর্টার: চলতি বছরের গত ২৫ মে যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ সিটির জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন। কারণ, এদিন কার্ডিফ কাউন্টি কাউন্সিলের লর্ড মেয়র হিসেবে এই প্রথম দক্ষিণ এশিয়ার মধ্য থেকে কোন মুসলিম নারী লর্ড মেয়র নির্বাচিত হলেন। আর সেই কৃতি নারী মৌলভীবাজারের কৃতি সন্তান ড. বাবলিন মল্লিক। যিনি এবছর বৃটেনের ওয়েলসের রাজধানী কার্ডিফ কাউন্টি কাউন্সিলের লর্ড মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।
ড. বাবলিন মল্লিক এর আগে ২ বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি এমপি নির্বাচনেও অংশ নিয়েছিলেন। মেয়র বাবলিনের স্বামী অধ্যাপক মল্লিক মোসাদ্দেক আহমেদ বৃটিশ রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন।
জানা যায়, ষাটের দশকে মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য, যুক্তরাজ্য ওয়েলস আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, প্রবাসের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মোহাম্মদ ফিরোজ আহমদের মেয়ে ড. বাবলিন বৃটেনের ওয়েলসের ইতিহাসে এই প্রথম দক্ষিণ এশিয়ার মধ্য থেকে মুসলিম নারী লর্ড মেয়র নির্বাচিত হয়ে বাঙালিদের জন্য আরেকটি সাফল্য অর্জনের মাধ্যমে নতুন ইতিহাসের সৃষ্টি করলেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যে বসবাসরত মৌলভীবাজার জেলার বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই ডজনেরও বেশি কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর ধারাবাহিক সাফল্যের এটাই বড় চমক বলে মন্তব্য করেছেন সেখানকার বাঙালি কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ।
তার এমন সাফল্য আত্মীয়স্বজনসহ প্রবাসী ও পর্যটন অধ্যুষিত জেলাবাসী ভিষণ উৎফুল্ল।
তারা আগামীতে সেখানকার পার্লামেন্টসহ আরও দায়িত্বশীল বড় পদে বাংলাদেশীদের দেখতে চান। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বাঙালিরা কৃতিত্বের সাথে বৃটেনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অধিষ্ঠিত হয়ে নেতৃত্ব দিবেন বলেও প্রত্যাশা করছেন।
জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলা সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মেয়ে ও সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার পুত্রবধূ ড. বাবলিন মল্লিক। বাবলিন মল্লিক ছোট বেলায় মা-বাবার সঙ্গে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। কার্ডিফে বেড়ে ওটা বর্তমান প্রজন্মের মেধাবী মুখ বাবলিন দুই ভাই এবং বোনের মধ্যে সবার ছোট।
তিনি বায়ো ক্যামিসট্রিতে মাস্টার্স ও কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কার্ডিফ এলাকায় বাংলাদেশি কমিউনিটির মাঝে শেকড় নামে একটি বাংলা স্কুল প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। চ্যারিটেবল সংগঠন, সাংস্কৃতিক অঙ্গন এবং কমিউনিটির উন্নয়নে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
দেশে অবস্থানরত বৃটেনের বিশিষ্ট বাঙালি কমিউনিটি লিডার ও সংগঠক মোহাম্মদ মকিস মনসুর তাকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তার এমন ধারাবাহিক সাফল্যে বাংলাদেশের বর্তমান বাঙালি প্রজন্মকে সেখানকার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আগামীতে আরও বড় দায়িত্ব অর্জন ও পালনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।