বিনোদন ডেস্ক : বিতর্কের অন্য নাম নোবেল। বারংবার তাঁর নাম জড়িয়েছে বিতর্কে। কখনও তাঁর কার্যকলাপ কখনও আবার তাঁর মন্তব্য, নোবেলকে নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। কখনও মদ খেয়ে মাতলামি, কখনও দুর্ঘটনা, কখনও রবীন্দ্র সংগীত নিয়ে বিরূপ মন্তব্য, একের পর এক কাণ্ড করেই চলেছেন দেশের সংগীতিশিল্পী মইনুল আহসান নোবেল। এবার ফের শিরোনামে উঠে এল বিতর্কিত এই নাম।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে কুড়িগ্রাম ফুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে কলেজটির ৫০ বছর পূর্তি ও সুর্বণ জয়ন্তী উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়েছিলেন নোবেল। সেখানেই মঞ্চে উঠে মদ্যপ নোবেল অসংলগ্ন আচরণ করতে শুরু করেন।
জানা গেছে, সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথম দিন ছিল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনাসভা, কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা, ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, র্যাফেল ড্র এবং ঢাকাস্থ শিল্পীগোষ্ঠীর পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত গায়ক নোবেলের রাত ৯টার দিকে গান শুরুর কথা থাকলেও তিনি মঞ্চে ওঠেন ১১টা ২০ মিনিটে।
চোখ থেকে চশমা খুলে পাঞ্জাবির কলারে রেখে তিনি বলেন, “দ্বিতীয় বার কুড়িগ্রাম আসলাম। এর আগে এসেছিলাম- তোমাদের সাথে দেখা হয়নি। সুদূর ইন্ডিয়ার বর্ডার লাইনে থেকে গেছিলাম। তোমাদের কারও সাথে দেখা হয়নি’’। এরপর “আমার চশমাটা কই” বলে চিৎকার শুরু করেন নোবেল। পরে চশমা পেয়ে চোখে পরে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানটি শুরু করেন। বেসুরো গলায় গান গাইতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি আছড়ে মাইক্রোফোন স্ট্যান্ডটি ভাঙার চেষ্টা করেন। গানের এক পর্যায় অসংলগ্ন আচরণ করতে করতে বসে পড়েন। তার এমন আচরণের কারণে ক্ষেপে গিয়ে দর্শকরা জুতো ও পানির বোতল ছুড়ে মারে নোবেলের দিকে। পরে স্টেজে থাকা কয়েকজন এবং আয়োজকরা নোবেলকে সরিয়ে নিয়ে যায়।
২০১৯ সালে জি-বাংলা টিভির রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’তে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতেও পরিচিতি পান নোবেল। প্রতিযোগিতায় তিনি তৃতীয় হয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে নানা মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এই তরুণ শিল্পী। তবে বৃহস্পতিবার তাঁর কাণ্ড দেখে হতবাক নেটপাড়া। ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে সেই ভিডিয়ো। নোবেলের এই অবস্থা দেখে অবাক তাঁর স্ত্রীও।
সোশ্যাল মিডিয়ায় নোবেলের স্ত্রী লেখেন, ‘সকাল থেকে শুরু করে ডজন খানেক নিউজ। সমস্যাটা যদি শারীরিক হতো হয়তোবা মানুষ কমেন্টে দোয়ার মাহফিল বসাতোl কিন্তু সমস্যাটা মানুষিক তাও আবার মাদক ঘটিত। যেরকম মানুষ নোবেল কোনো দিনই প্রথম থেকে ছিল না। এটা আমার নিজেরই দীর্ঘদিনের দেখা শো তে যাবার সময় গাড়ি দাড় করিয়ে নোবেলের নামাজ পড়া। সা রে গা মা পা চলাকালীন সময়ে পুরো শুটিংয় ইউনিটকে বসিয়ে রেখে নামাজ পড়া আর সবার সাথে অমায়িক ব্যবহার। আর সে মানুষটা এখন নিজের কার্যকলাপে নিজেই নিজেকে চিনতে পারে না। নিজের নিরহংকার রূপকে ঢেকে পরিবার ও ভক্তবৃন্দদের কাছে নিজের অস্বাভাবিক রূপ প্রকাশের দীর্ঘ প্রচেষ্টা।’
অভিযোগ ও অনুষ্ঠান পণ্ড হওয়ার বিষয়ে শিল্পী নোবেলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পূর্তি অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম রিজু বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে আমি দর্শক ও জেলাবাসীসহ সকলের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। কেন এমন ঘটনা ঘটলো তা নিয়ে আমরা বৈঠকে বসবো।’
আরও পড়ুন: