নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২০তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। করোনায় পুরো বিশ্ব থমকে গেলেও আমাদের অর্থনীতি থামেনি। ২০০৬ এর ৬০ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি এখন ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারে পরিণত হয়েছে।
শনিবার (১১ মার্চ) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পোশাক খাতে বিশ্বে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। বেসরকারি খাতকে গুরত্ব না দিলে এতো কিছু করা সম্ভাব হতো না।
সরকারপ্রধান বলেন, নিজস্ব অর্থায়নের পদ্মা সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ তাদের সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা যে পারি নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে সেটা প্রমাণ করেছি। রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছি।
কোনো হতাশা নয়, ব্যবসায়ীদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, লাল ফিতার দৌরাত্ম্য যেন না থাকে, সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগকে উন্নয়নের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। ব্যবসায়িক পরিবেশের ওপর আওয়ামী লীগ সরকার সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। সেটি আরও সংস্কার ও ব্যবসাবান্ধব করা হবে। লাল ফিতার দৌরাত্ম্য সরিয়ে দেওয়া হবে। যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে, সঙ্গে সঙ্গে বাস্তবায়নও হবে।
এ সময় ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলার অভিযাত্রায় শামিল হতে বেশি-বিদেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
এর আগে, দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগকে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ বিজনেস সামিট-২০২৩’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত রয়েছেন।
তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন ১৩ মার্চ পর্যন্ত চলবে। সামিটে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাত নিয়ে ১৭টি সেমিনার ও ৩টি প্লেনারি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশ নেবেন দুই শতাধিক আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড, ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী।
সম্মেলনে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, চীন, ভুটান, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ ১২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সিইও এবং ২০০ এর বেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিশ্বের ১৭টি দেশের ব্যবসায়ী নেতারা অংশ নেবেন। ইতোমধ্যে অনেকেই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, সৌদি বাণিজ্যমন্ত্রী ড.মজিদ বিন আবদুল্লা আলকুস্সাইবি, ভূটানের শিল্প, বাণিজ্য ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী কার্মা দর্জি, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার উপ-মহাপরিচালক অ্যাম্বাসেডর ঝিয়াংচেন ঝাং, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি,এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান অনুষ্টানে বক্তৃতা করেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসীম উদ্দিন স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগের নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিদেশীদের কাছে তুলে ধরার অংশ হিসেবে এফবিসিসিআইয়ের ৫০তম প্রতিষ্টা বার্ষিকীতে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে বাংলাদেশের টেকসই প্রবৃদ্ধির যে ভিত্তি তৈরি হয়েছে তার সাফল্যের চিত্র তুলে ধরা হবে।
বাংলাদেশের সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক সম্ভাবনা, ব্যবসা সম্প্রসারন ও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
দেশি-বিদেশি অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা যথেষ্ট অর্থ দিয়ে সম্মেলনে নিবন্ধন করেন। ওয়ালমার্ট, জারা’র মত কোম্পানিগুলো কলকাতায় চলে এসেছে। এখন তাদের বাংলাদেশে আসার সময় হয়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানির সম্ভাবনার পাশাপাশি লোকাল কনজ্যুমার মার্কেটও সম্প্রসারিত হচ্ছে।
দেশে এখন ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল দৃশ্যমান। আমাদের এসব সক্ষমতা তুলে ধরা দরকার। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সরকার বিজনেস ফ্যাসিলিটেশনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে।
প্রায় সাড়ে সাতশ’ লোক ইতোমধ্যে সম্মেলনে নিবন্ধন করেছেন। এছাড়া নিবন্ধন ছাড়া বিপুল সংখ্যক লোক সম্মেলনে যোগ দিবেন।
আরও পড়ুন:
গুলিস্তানে বিস্ফোরণ: দগ্ধ আরও একজনের মৃত্যু, প্রাণহানি বেড়ে ২৪
আজ ময়মনসিংহ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে সৌদির জন্য জমির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর