কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, সংশ্লিষ্ট সবাইকে শিক্ষার সাথে কর্মের সংযোগ ঘটাতে হবে। রাষ্ট্রপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বলেন, দেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অনেক বিভাগ রয়েছে যেখানে লেখাপড়া করলে হয়তো জ্ঞানার্জন সম্ভব হবে কিন্তু কর্মসংস্থানের সুযোগ একেবারেই সীমিত।
শুক্রবার (৩ মার্চ) তার নিজজেলায় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ’ এর শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ খোলার ক্ষেত্রেও বাস্তবতা ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দেয়ার ও তাগিদ দেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শিক্ষার্থীরাও বুঝে না বুঝে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি এই ভাব ধরার জন্য এসব বিভাগে ভর্তি হন। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্র-শিক্ষকের বাইরে স্থানীয় জনগণকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি হামিদ।
বিশ্ববিদ্যালয় আচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ, সংশ্লিষ্ট সকলের প্রচেষ্টায় এ এলাকার শিক্ষা ও উন্নয়নের মাধ্যম হয়ে ওঠবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হাওড়া অঞ্চলের সামাজিক উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে।
তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
রাষ্ট্রপতি হামিদ উল্লেখ করেন, “বিশ্ববিদ্যালয় অর্জিত জ্ঞানের গুদামঘর নয়। এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা থেকে জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাতাদের আবির্ভাব ঘটে। নেতৃত্বের বিকাশ ঘটে।”
রাষ্ট্রপ্রধান কিশোরগঞ্জের এই নতুন বাতিঘরকে লালন করা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “আমরা চাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কিশোরগঞ্জ, শুরু থেকেই গুণেমানে সমৃদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচালিত হোক। যুগের চাহিদা ও কর্মসংস্থানের সুযোগের কথা বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষা কারিকুলাম নির্ধারণ করতে হবে।”
হাওড়বেষ্টিত জেলা কিশোরগঞ্জে ভাটি এলাকায় বিগত ১২/১৪ বছরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এখন আমাদের ছেলেমেয়েরা যাতে লেখাপড়ায় ভাল করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, অশিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত বেকারের চেয়ে শিক্ষিত বেকারের বোঝা পরিবার ও সমাজের জন্য অনেক বেশি কষ্টের। তাই খেয়াল রাখতে হবে যে, শুধুমাত্র শিক্ষার জন্য শিক্ষা বা সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাবেন না।
“শিক্ষিত জনশক্তি দেশের জনসম্পদ-” বঙ্গবন্ধুর এই কথাটি উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, “আমি বাংলাদেশে এমন ব্যবহারিক শিক্ষার প্রসার চাই, যা দ্বারা প্রতিটি নাগরিক দেশের প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে”।
রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ভাল করতে না পারলে কিশোরগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় হলেও ভর্তির সুযোগ পাওয়া যাবে না।
রাষ্ট্রপতি এলাকার ছেলে-মেয়েরা যাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ এ ভর্তি হতে পারে এবং লেখাপড়া শেষে পরিবার ও দেশের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে সে ব্যাপারেও বাবা-মা, অভিভাবকসহ সকলকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি এলাকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজগুলোতে লেখাপড়ার পরিবেশ ও মানোন্নয়নের বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “মনে রাখতে হবে অবকাঠামো ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন শিক্ষার বিস্তার ও মানোন্নয়নের জন্য যথেষ্ঠ নয়।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ ও সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ জাকিয়া নূর লিপি, অন্যান্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সূত্র-বাসস।