স্পোর্টস ডেস্ক : ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে ইংল্যান্ড। নেতৃত্বের পাশাপাশি ওই আসরে এক সেঞ্চুরি ও এক ফিফটিতে ৩৭১ রান করে দলের সাফল্যেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন অধিনায়ক এইউন মরগান। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে পরবর্তী সময়ে নিজের পারফরম্যান্স ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে ২০২২ সালের জুনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। যে অধিনায়কের হাত ধরে এই গৌরবগাঁথা লিখেছিল স্বাগতিকরা, সেই এইউন মরগান ৩৬ বছর বয়সে এসে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন।
ক্রিকেটের তীর্থভূমি বলা হয় ইংল্যান্ডকে। ১৯৭৫ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের যাত্রাও শুরু হয়েছিল দেশটিতে। ক্রিকেটকে নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলা ইংলিশরা কিনা ওয়ানডে বিশ্বকাপটাই জিততে পারছিল না ৪০ বছর ধরে। অবশেষে পাশার দান বদলে যায় স্বপ্নবাজ এক তরুণ অধিনায়কের হাত ধরে, এইউন মরগান তার নাম। ২০১৯ সালে লর্ডসে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে দলকে বিশ্বের সেরা করেন মরগান।
ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের দুই ফরম্যাটের দায়িত্ব সামলানো মরগান গত বছরের (২০২২ সাল) জুলাই মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন। এরপরে ঘরোয়া ক্রিকেট ও বিশ্বের নানা প্রান্তে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। এবার মরগান থামলেন মাঠের সব ধরনের ক্রিকেট থেকেই।
আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) অবসরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমি খুব গর্বের সঙ্গে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিচ্ছি। গত কয়েক বছরে এই খেলা আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। তবুও অনেক চিন্তাভাবনার পরেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটাই হয়তো সঠিক সময়।
২০০৫ সালে ইংল্যান্ডে এসে মিডলসেক্সে যোগ দেওয়ার পর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার লিগে পার্ল রয়্যালসে খেলা পর্যন্ত, প্রতিটা মুহূর্ত আমি উপভোগ করেছি।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর পর দ্য হান্ড্রেডে লিগে লন্ডন স্পিরিটের হয়ে খেলেছেন মরগ্যান। কয়েকমাস আগে টি-টেন লিগে খেলেছেন নিউ ইয়র্ক স্ট্রাইকার্সেও। সদ্য শেষ হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকান টি-টোয়েন্টি লিগে পার্ল রয়্যালসেরও প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তবে জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে যাচ্ছেন আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়েও দায়িত্ব সামলানো এই ক্রিকেটার।
বিদায় বেলায় তিনি আরও বলেছেন, ‘যেকোনো খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন আছেই। কিন্তু আমার পরিবার এবং বন্ধুরা সবসময় কঠিন সময়গুলোয় আমার পাশে থেকেছে। আমি আমার স্ত্রী, পরিবার, কোচ, সতীর্থ এবং ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই; যারা আড়ালে থেকে আমাকে শুধু খেলোয়াড়ই নয়, আজকের এই আমাকে গড়ে তুলতে অবদান রেখেছে। ক্রিকেটকে ধন্যবাদ, আমি বিশ্ব ভ্রমণ করতে পেরেছি এবং দারুণ সব লোকদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, যাদের অনেকের সঙ্গে আজীবনের বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পেরেছি। বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলা আমাকে এত সব স্মৃতি দিয়েছে যা সারাজীবন মনে রাখব।’
মরগ্যান মাঠের ক্রিকেটকে বিদায় বললেও ক্রিকেটের সঙ্গেই যুক্ত থাকছেন। দেশের ব্রডকাস্টিং চ্যানেলগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাবেন তিনি। কোচিং পেশায় যুক্ত হওয়ার ইচ্ছে রয়েছে ইংলিশ সাবেক এই অধিনায়কের।
আরও পড়ুন: