October 8, 2024 - 5:34 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeসারাদেশ ও রাজনীতিসারাদেশঅর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ মেধাবী কলেজছাত্রের, বাঁচার আকুতি

অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ মেধাবী কলেজছাত্রের, বাঁচার আকুতি

spot_img

মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: ‘আব্বা আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে, আমি আর সহ্য করতে পারছি না। তোমরা আমাকে যেভাবেই হোক অর্থ যোগাড় করে চিকিৎসা দিয়ে বাঁচাও। আমি বাঁচতে চাই বাবা! আমি কলেজে যেতে চাই, আমার বন্ধুদের সাথে খেলতে চাই।’ কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিল প্যারালাইজড আক্রান্ত চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের দিনমুজুর আব্দুল মোনাফ ও গৃহিনী লাইলা বেগম দম্পতির ৪র্থ ছেলে মোহাম্মদ রিমন (১৮)।

মোহাম্মদ রিমন চকরিয়া সরকারী কলেজের একাদশ শ্রেণির মেধাবী ছাত্র।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছেলেটির সারা শরীরে পা থেকে কোমর পর্যন্ত অবস দিন রাত বিছানায় শুয়ে শুধু চিৎকার করছে আর বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে। প্রায় ১৭ মাস দেড় বছর যাবৎ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। ইতোমধ্যে সম্পদ যা ছিল সব বিক্রি করে প্রায় ৩/৪ লাখ টাকা খরচ করে ছেলের চিকিৎসা করিয়েছেন তার বাবা। বর্তমানে বাড়ির দুই শতাংশ জায়গাটুকুই তার শেষ সম্বল। ছেলের চিকিৎসার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। কিন্ত গরিব পিতার পক্ষে চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা আর সম্ভব হচ্ছেনা। তাহলে কি অর্থের অভাবে মোহাম্মদ রিমনের জীবন প্রদীপ নিভে যাবে?

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে হঠাৎ করে মোহাম্মদ রিমনের প্রে স্রাব বন্ধ হয়ে পা হতে কোমর পর্যন্ত অবস হলে দ্রুত কক্সবাজার মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে,চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জানায় প্যারালাইজড হয়েছে । পরবর্তীতে আবারও কক্সবাজার ইউনিয়ন হাসপাতালে ডা.মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর মাধ্যমে ওই বছর সেপ্টম্বর মাসে অনেক পরিক্ষা দেওয়ার ফলে চিকিৎসা করানো হয় । কিছু দিন সুস্থ থাকার পর আবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম সি এস সি আর (প্রাঃ) লিমিটেডে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জানায় তার মেরুদণ্ড শাইরক প্যারালাইজড হয়েছে বলে জানায়। পরিশেষে দেয়া হয় তাকে্ ইন্ডিয়া চেন্নাই নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ । প্রতিদিন তার প্রায় ৭/৮ শ’ টাকার ওষুধ লাগে। তাই বর্তমানে টাকার অভাবে চকরিয়ার জমজম হাসাপাতালের ডাঃ এস. এম. আরাফাত আমিনের চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মোহাম্মদ রিমনের বাবা কান্না জড়িত কণ্ঠ জানান, আমার ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল।এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই, আমার ছেলেটা বাঁচলেই আমি খুশি। আমি অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারছিনা। এছাড়া আমার ৫ টি ছেলে তারমধ্যে একটি ছেলে মারা গেছে ও দুটি ছেলে বিবাহ করে দিনমজুর করে কোনোরকমে সংসার চলছে। তারমাঝে আমার চতুর্থ সন্তান মোহাম্মদ রিমন ওনি বদর খালী এম. এস. ফাজিল (ডিগ্রি)মাদ্রাসায় ২০২০ সালে দাখিল পরিক্ষা দিয়ে ২০২১ চকরিয়া সরকারি কলেজে ভর্তি হয় এরপর কিছু দিনের মধ্যে তার এইরকম রোগ সৃষ্টি হয়। এবং এক ছেলে ৭ম শ্রেণিতে লেখা পড়া করছে আমার তাদের চিকিৎসা সহ লেখা পড়ার খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমি সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আকুল আবেদন করছি আর্থিক সহায়তা করার জন্য।

মোহাম্মদ রিমনের মা লাইলা বেগম আবেগ আপ্লুত কন্ঠে বলেন, আমার একমাত্র ছেলেটাকে লেখাপড়া শিখিয়ে চাকরি করায়ে সংসারের হাল ধরাবো । কিন্ত সব স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে।অনেক আদরের ছেলেটা আমার অর্থ ও চিকিৎসার অভাবে চোখের সামনে মারা যাবে মা হিসেবে আমি কেমনে সইব!

চকরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের পদ্মলোচন বড়ুয়া বলেন, ছেলেটি অনেক মেধাবী ছাত্র। কিন্ত অসুস্থ হওয়ায় আর্থিক সংকটের কারণে চিকিৎসা না করায় কলজে আসতে পারছে না। আমি আমার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যতটুকু পারি সহযোগিতা করবো।
বদরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরে হোছাইন আরিফ বলেন, মোহাম্মদ রিমনকে চিকিৎসা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু তার অভাবের সংসারে এত অর্থের যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। তার চিকিৎসার জন্য দেশের সহৃদয় ব্যাক্তি ও বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

মোহাম্মদ রিমনের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা করতে-বিকাশ নম্বর (ব্যাক্তিগত আইডি না থাকায়) ০১৮৩৯২৯৮০৮৭ (শহীদ)।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ