বিশ্বকাপে বাংলাদেশের এমভিপি মাহমুদুল্লাহ

Posted on November 14, 2023

স্পোর্টস ডেস্ক : বিশ্বকাপে অত্যন্ত হতাশাজনক মিশনে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে মুল্যবান খেলোয়াড় (এমভিপি) হিসেবে টুর্নামেন্টটি শেষ করেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

টুর্নামেন্টে নয় ম্যাচের মধ্যে মাত্র দুটিতে জিতেছে টাইগাররা। যা ২০০৭ আসরের পর বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ। কিন্তু হতাশাজনক এই সফরেও বাংলাদেশের হয়ে মাথা উচু করে রেখেছেন মাহমাদুল্লাহ। যাকে শেষ মুহুর্তে দলভুক্ত করা হয়েছিল অন্যদের ব্যর্থতার কারণে।

আসরে আট ম্যাচে অংশ নিয়ে দারুন নৈপুন্য প্রদর্শন করে ৫৪.৬৬ গড়ে বাংলাদেশী ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩২৮ রান করেছেন তিনি। তার স্ট্রাইক রেটও ছিল সাড়াজাগানো ৯১.৬২। দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ৯৫.৩৯ স্ট্রাইক রেটে শীর্ষে ছিলেন তানজিদ হাসান তামিম।

দলের হয়ে একমাত্র সেঞ্চুরি পাওয়ার কারণে এই আসরটি রিয়াদের জন্য বিশেষ কিছু। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি হাকিয়েছিলেন তিনি। ফলে বিশ্বকাপে এখন রিয়াদের সেঞ্চুরি সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন। এটিও বাংলাদেশের কোন ব্যাটারের জন্য সর্বোচ্চ। বিশ্বকাপে দুটি সেঞ্চুরি রয়েছে বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। দুটি সেঞ্চুরিই তিনি করেছেন ২০১৯ বিশ্বকাপে। যেটি বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশী কোন ব্যাটারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮৪ রান নিয়ে এবারের বিশ্বকাপ মিশন শেষ করেছেন ওপেনার লিটন দাস। বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোন বাংলাদেশী ওপেনারের জন্য এক আসরে এটি সর্বোচ্চ সংগ্রহ। শুরুতে তাকে নিয়ে সফল হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলো দল । তবে এখন তাকে ব্যর্থ হিসেবেই গন্য করা হচ্ছে। আসরে দুটি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন লিটন দাস।

বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২২২ রান করেছেন সহ-অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। এর পরের অবস্থানে আছেন মুশফিকুর রহিম (২০২) ও মেহেদি হাসান মিরাজ (২০১)। বাংলাদেশ দলের মাত্র ৫জন ব্যাটার এবারের বিশ্বকাপে ২০০ রানের মাইলফলক অতিক্রম করতে পেরেছেন।

২০১৯ বিশ্বকাপে রেকর্ড বইয়ে নাম লেখানো বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বারের বিশ্বকাপে রান সংগ্রহের দিক থেকে ষষ্ঠ স্থানে আছেন ১৮৬ রান নিয়ে। অথচ আগের আসরে ৬০৬ রান নিয়ে টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের আসনে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, বল হাতে ১১ উইকেট নিয়ে তিনি বিশ্বকাপে বিরল এক রেকর্ড গড়েছিলেন। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তিনি বিশ্বকাপে ৫০০ এর অধিক রানের পাশাপাশি ১০ এর অধিক উইকেট শিকারীতে পরিণত হয়েছিলেন।

তবে এর ন্যুতম ছাপও এবারের আসরে রাখতে পারেননি সাকিব। আসরে বাংলাদেশের ভরাডুবির অন্যতম কারন ছিল সাকিবের ফর্মহীনতা। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের হয়ে যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির খাতায় নাম লিখিয়েছেন অফস্পিনার মিরাজ ও বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। দুইজনেই ১০টি করে উইকেট শিকার করেছেন। শরিফুল আসরে আট ম্যাচে খেললেও মিরাজ খেলেছেন নয় ম্যাচে।

সাত ম্যাচ থেকে ৯ উইকেট শিকার করেছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আর তিন ম্যাচে অংশ নিয়ে ৬ উইকেট শিকার করেছেন মাহেদি হাসান। বোলিং বিভাগে সবচেয়ে বেশী হতাশ করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ। যথাক্রমে আট ও সাতটি করে ম্যাচ খেলে এই দুই পেসার শিকার করেছেন ৫টি করে উইকেট।

১০ উইকেট শিকার করলেও দলীয় পারফর্মেন্সে কোন কার্যকরী ছাপ ফেলতে পারেননি শরিফুল। আসলে সাকিব ছাড়া বাংলাদেশের কোন বোলারই দলের হয়ে কোন গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা রাখতে পারেননি। শুধুমাত্র আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তিন উইকেট নিয়ে দলীয় জয়ে ভুমিকা রেখেছেন সাকিব।