অধ্যাপক তাহের হত্যা: জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকরে বাধা নেই

Posted on July 17, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে করা রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকর করতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

সোমবার (১৭ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

তাহের হত্যা মামলায় আরেকজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন- অধ্যাপক মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। এর মধ্যে জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে তার ভাই রিট করেছিলেন।

আইনজীবী জানান, মামলাটি আপিল বিভাগ থেকে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে, ফাঁসির আদেশ আছে ফলে হাইকোর্ট এখানে শুনার এখতিয়ার রাখেন না। আদালত অবমাননাকর বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নওরোজ রাসেল।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এন গোস্বামী। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। এছাড়া শুনানিতে অধ্যাপক তাহেরের আইনজীবী কন্যা শেগুফতা তাবাসসুম আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

নিহত ড. এস তাহের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। আর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ছিলেন তাহেরের সহকর্মী, একই বিভাগের শিক্ষক ও সহযোগী অধ্যাপক। আর তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার ছিলেন জাহাঙ্গীর।

গত ৩ মে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের রিভিউ আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ করেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৮ বিচারপতির বেঞ্চ ২১ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করেছেন।

গত ২ মার্চ এ মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

গত বছরের ৫ এপ্রিল অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের ফাঁসি বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য দুই আসামির যাবজ্জীবন দণ্ডও বহাল রাখেন আদালত। যাবজ্জীবন সাজা বহাল থাকা দুজন হলেন নাজমুল আলম ও আব্দুস সালাম।

পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন আসামিরা।

অধ্যাপক ড. তাহের হত্যা মামলায় ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুতবিচার আদালত চারজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুইজনকে বেকসুর খালাস দেন। পরে আসামিরা এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।

২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল হাইকোর্ট দুই আসামির ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধেও আসামিরা আপিল করেন।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টার থেকে নিখোঁজ হন অধ্যাপক তাহের। তিনি সেখানে একাই থাকতেন। কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম তার দেখাশোনা করতেন। ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি বাসার পেছনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক এস তাহের আহমেদের গলিত মরদেহ। ৩ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহীর মতিহার থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা করেন।

আরও পড়ুন:

জি কে শামীমের ১০ বছরের কারাদণ্ড