ঈদের নামাজে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ: গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০০

Posted on June 10, 2025

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের বড় আড়িয়ামোহন ও ছোট আড়িয়ামোহন গ্রামের মধ্যে ঈদের নামাজে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে দুই দিনব্যাপী সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন অন্তত ৫ থেকে ৭ জন। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি কয়েকটি বাড়িঘর, যানবাহন ও দোকান লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে।

রোববার (৮ জুন) থেকে শুরু হয়ে সোমবার (৯ জুন) পর্যন্ত চলা এ সংঘর্ষে বড় আড়িয়ামোহন গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ছোট আড়িয়ামোহনের শহিদুল ও তার ছেলে হিমেলসহ শতাধিক ব্যক্তি এই হামলার নেতৃত্ব দেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের দিন সকালে স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে নামাজে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে বড় আড়িয়ামোহনের নজরুল ইসলাম (৩০) ও ছোট আড়িয়ামোহনের হিমেল (৩২) এর মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হিমেল নজরুলকে আঘাত করেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হলেও রাত সাড়ে ৯টার দিকে হিমেল ও বহিরাগতদের নিয়ে বড় আড়িয়ামোহনের কয়েকজনের ওপর হামলা চালানো হয়।

পরদিন উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে দুই গ্রামের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। বড় আড়িয়ামোহন গ্রামে একাধিক বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়, লুটপাট হয় নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্র ও গবাদিপশু।

ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন: মাহবুবের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ২ লাখ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণ ও আসবাবপত্র লুট। সোবাহানের খরের পালায় আগুন ও ঘর ভাঙচুর। আবুল হাশেমের ঘরে ১৫ লাখ টাকা, জমির দলিল, ফ্রিজসহ তিনটি কক্ষ আগুনে পুড়ে যায়। বারিক সরকার ও রুহুল আমিন গুলিবিদ্ধ হন। পলাশ সরকার, শাহ আলীসহ আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ বা রাবার বুলেটে আহত হন। কয়েকটি বাড়ি ও ফার্মে ভাঙচুর, একটি মিনি ট্রাক ও একটি নতুন ভ্যান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। দুইটি পবিত্র কুরআন শরীফেও আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় বড় আড়িয়ামোহন গ্রামের পক্ষ থেকে সদর থানায় চারটি পৃথক অভিযোগ করা হয়েছে। পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন ছোট আড়িয়ামোহনের শহিদুল নামের এক ব্যক্তি।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান জানান, “ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ টহল জোরদার রয়েছে। ঘটনাটি সেনাবাহিনীর ১১ পদাতিক ডিভিশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।”

এদিকে আহত ও ক্ষতিগ্রস্তরা দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।