২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগের আলটিমেটাম

Posted on November 6, 2025

পুঁজিবাজার ডেস্ক: গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্বল ৫ ব্যাংক মার্জারের ঘোষণা এবং সেসব ব্যাংকে থাকা শেয়ার শূন্য ঘোষণা করেছেন গভর্নর। এ কারণে আলটিমেটাম দিয়েছে সংগঠনটি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।

বিনিয়োগকারীদের মতে শেয়ার শূন্য করতে গভর্নরের কোনো অধিকার নেই। তাই বৃহস্পতিবার থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গভর্নরকে পদত্যাগ করার আলটিমেটাম দিয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

প্রসঙ্গত, সমস্যাগ্রস্ত ৫ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করে একটি বৃহৎ ইসলামী ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে ব্যাংকগুলো পরিচালনা করবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিয়োগ দেওয়া প্রশাসক। ব্যাংক অকার্যকর হলেও আগের নামেই এলসি, আমানত ও চেক নিষ্পত্তি হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

যেসব ব্যাংকের বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে সেই ব্যাংকগুলো হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রশাসক হিসেবে এক্সিম ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শওকাতুল আলম, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্বে নির্বাহী পরিচালক সালাহ উদ্দিন, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে পরিচালক মো. মোকসুদুজ্জামান এবং ইউনিয়ন ব্যাংকে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসেম।

গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকের বোর্ড বাতিল হলেও গ্রাহকসেবায় কোনো বিঘ্ন ঘটবে না। ব্যাংকগুলোর পেমেন্ট, রেমিট্যান্স, এলসিসহ সব ধরনের কার্যক্রম আগের মতোই চলবে।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পাঁচটিতে মোট ৭৫০টি শাখা ও ৭৫ লাখ আমানতকারী রয়েছে। আমরা তাদের নিরাপত্তা দিতে চাই। ব্যাংকগুলো যেহেতু সরকারের অধীনে যাচ্ছে তাই আমানতকারীদের আমানত সম্পূর্ণ নিরাপদ। ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হলেও যাদের প্রয়োজন আছে তারাই শুধু অর্থ উত্তোলন করবেন। অযথা ব্যাংকে টাকা তোলার জন্য ভিড় করবেন না।

তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব সরকার নিলেও বেসরকারি নিয়মেই চলবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কাঠামোতে কোনো ধরনের পরিবর্তন হবে না। বিদ্যমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী কর্মকর্তারা বেতন-ভাতা পাবেন।

শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটির মূল্য এখন নেগেটিভ। তাই শেয়ারের ভ্যালু জিরো বিবেচনা করা হবে। কাউকেই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না।

নিয়ম অনযায়ী সব কম্পানির মালিককে লভ্যাংশের পাশাপাশি ক্ষতির ভাগও নিতে হয়। কিন্তু আমরা এসব ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডরদের জরিমানা করছি না। শুধু শেয়ারমূল্যগুলো শূন্য বিবেচনা করছি। অন্য দেশে হলে তাদের থেকে জরিমানা আদায় করা হতো। এখন ব্যাংকগুলোর নিট অ্যাসেট ভ্যালু ঋণাত্মক ৩৫০ টাকা।’

গভর্নর আহসান মনসুর জনসাধারণকে আশ্বস্ত করে বলেন, ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতকারীরা ১০০ শতাংশ টাকা তুলতে পারবেন। বড় অঙ্কের আমানতের ক্ষেত্রে ধাপে ধাপে উত্তোলনের সুযোগ থাকবে। এর বিস্তারিত পরবর্তীতে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে তিনি সবাইকে উদ্বেগে না পড়ে শুধু প্রয়োজনীয় পরিমাণ অর্থ তোলার অনুরোধ জানান।