কুয়েতে আগুনে নিহতদের ৪০ জনই ভারতীয়

Posted on June 13, 2024

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কুয়েতের মানগাফ শহরের ছয়তলা ভবনে আগুনের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জন হয়েছে। যাদের মধ্যে ৪০ জন ভারতীয় আবাসন শ্রমিক বলে জানা গেছে। স্থানীয় সময় বুধবার (১২ জুন) সকাল ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

কুয়েতের কর্মকর্তাদের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্যের পাশাপাশি আরও জানিয়েছে, আগুনের ঘটনায় আহত অবস্থায় আরও ৪০ জনের বেশি মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কুয়েতের কর্মকর্তারা জানায়, ছয়তলা ভবনের একটি রান্নাঘরে আগুনের সূত্রপাত হয়। ভবনটিতে প্রায় ১৬০ জন মানুষ বাস করতেন। তারা একই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আগুন থেকে বাঁচতে ভবনের পঞ্চম তলা থেকে কয়েকজন লাফ দিয়ে মারা যান।

এর আগে সংবাদ মাধ্যম এএফপি কুয়েতের দক্ষিণাঞ্চলের মানগাফ শহরের বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৩৫ জন নিহত হওয়ার খবর জানিয়েছিল।

দেশটির ফরেনসিক বিভাগের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইদ আল-ওয়াইহানের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম আরব টাইমস কুয়েতের প্রতিবেদনে বলা হয়, মানগাফের ওই ভবনে আগুনে মৃতের সংখ্যা ৩৫ ছাড়িয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১৫ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যাদের মধ্যে চারজন পরে মারা গেছে।

এদিকে, ফায়ার সার্ভিসের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আল-গারিব বলেছেন, প্রাথমিকভাবে বেশকিছু প্রাণহানি ও আহতের তথ্য পাওয়া গেছে।

বুধবার সকালে ফায়ার বিভাগ কর্মীরা ঘনবসতিপূর্ণ একটি বাসভবনে আগুনের সূত্রপাতের খবর পায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ভবনটির বাসিন্দারা ঘুমাচ্ছিলেন। ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে না পারায় অধিকাংশ প্রাণহানি হয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছিল।

সূত্রের তথ্যমতে, বর্তমানে ভবনটিতে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও আহতদের ব্যবস্থাপনায় ব্যস্ত সময় পার করছে কর্তৃপক্ষ। একাধিক ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ওই ভবনে কাজ করছে। নিকটস্থ হাসপাতালগুলোতে আহতদের চিকিৎসা চলছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ৪৩ জনকে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত ছিলেন অনেকে। এর মধ্যে চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আহতদের মধ্যে ২১ জনকে আল-আদান হাসপাতালে, ছয়জন আল-ফারওয়ানিয়াহ হাসপাতালে, একজন আল-আমিরি হাসপাতালে, ১১ জন মুবারক হাসপাতালে এবং চারজনকে জাবের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত ও নিবিড় পরিচর্যা প্রদানে মেডিকেল টিমগুলো অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আহতদের অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সমস্ত প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে এবং সম্ভাব্য সর্বোত্তম চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করছে। আহতদের ফলোআপ করার জন্য এবং তাদেরকে মানসিকভাবে ও তাদের পরিবারকে নৈতিকভাবে সমর্থন দেওয়ার জন্য বিশেষায়িত মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে।