জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে দেশকে মুক্ত করতে চাই: প্রধানমন্ত্রী

Posted on June 5, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক: জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে দেশকে মুক্ত করার ইচ্ছার কথা জানিয়ে সবাইকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পরিবেশ মেলা-২০২৪ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২৪-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে দেশকে মুক্ত করতে চাই। সবাইকে গাছ লাগানোর প্রতি যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানাই।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশের মানুষকে রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। জলবায়ু পরিবর্তনের যে বিরূপ প্রভাব, তা থেকে দেশকে আমরা মুক্ত করতে চাই। সেই দিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ গাছ লাগায় আর বিএনপি তা ধ্বংস করে বলে ওই সময় আক্ষেপ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোট এবং তার পরবর্তী দুই বছর এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। ২০১৩ সালে সরকার উৎখাতের আন্দোলনের নামে মানুষকে যেমন হত্যা করা…তা ছাড়া বাস, ট্রাক, গাড়ি, রেল, লঞ্চ, সেগুলো আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া আর বৃক্ষ নিধন করা হয়। লক্ষ লক্ষ বৃক্ষ কেটে ফেলে দেয় জামায়াত-বিএনপি। আমরা যেখানে গাছ লাগিয়েছি, সেগুলো তারা ধ্বংস করেছে। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্যের বিষয়।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালনের জন্য ১৯৮৪ সালে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নেয় এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়। মূল দল আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের প্রত্যেকটা সদস্য বৃক্ষরোপণ করবে। আমাদের নির্দেশ ছিল এবং সেই নির্দেশনা আমরা এখনও পালন করে যাচ্ছি।’

সবুজায়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা ১৯৭২ সালে পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে একটা সবুজাচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের ১৬ জুলাই তিনি সেখানে বৃক্ষরোপণ সপ্তাহ উদযাপন করেন। বৃক্ষরোপণের জন্য মানুষকে ব্যাপকভাবে উদ্বুদ্ধ করেন।

‘কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে যে ঝাউবন, সেটি জাতির পিতার উদ্যোগে রোপণ করা হয়। তা ছাড়া আমাদের দ্বীপাঞ্চল, বিশেষ করে চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণ করা এবং সেখানে প্রত্যেক প্রজাতির পশুপাখি জোড়ায় জোড়ায় ছেড়ে দেয়া হয়। সেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শুরু করে দিয়েছিলেন।’

পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘প্লাস্টিক এখনও ব্যবহার হয়, তবে একটা সুখবর হলো পাটের থেকে এমন ধরনের ব্যাগ এবং জিনিস তৈরি হচ্ছে। সেটা আমাদের একজন বিজ্ঞানী মোবারক সাহেব আবিষ্কার করেছেন। সেগুলো পরিবেশ দূষণ করবে না। এগুলো মাটির সাথে মিশে যাবে।

‘এগুলো যাতে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার হয়, ইন্ডাস্ট্রির সাথে যুক্ত করা হয়েছে। পাট আমাদের সোনালী আঁশ। পাট থেকে আমরা পরিবেশবান্ধব অনেক কিছু তৈরি করতে পারি, যা আমাদের পরিবেশকে আরও সুরক্ষা দেবে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১০০ মিলিয়ন হেক্টর উর্বর ভূমি অবক্ষয় ঘটছে, যার ফলে বৈশ্বিক জিডিপি ৫০ শতাংশ হুমকির মুখে পড়ছে। ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের ৫০ মিলিয়ন মানুষ বাস্তচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ একটা ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। আমাদের ভূমি সম্পদ খুব সীমিত।’