ঝুঁকিপূর্ণ-ভাড়া ভবনে চলছে পটুয়াখালী রেজিষ্ট্রি অফিসের কাজ, পরিত্যক্তের এক যুগেও মেলেনি নতুন ভবন

Posted on January 26, 2023

মোঃ বাদল হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি: পটুয়াখালীতে জেলা রেজিষ্ট্রি ও সদর উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দ্বিতল ভবনটি অতি পুরাতন হওয়ায় ছাদ এবং ওয়ালের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে এবং ওয়াল সহ ছাদের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ফাটল দেখা দেওয়ায় ২০১১ সালে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ হিসেবে ঘোষনা করা হয়। এ অবস্থার দীর্ঘ এক যুগ অতিবাহিত হলেও মন্ত্রনালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে বার বার নতুন ভবনের তাগিদ দিলেও মেলেনি নতুন ভবন। রেজিষ্ট্রি অফিসের দ্বিতল ভবনটি অকেজো ও জরাজীর্ণ হওয়ার পর থেকেই পটুয়াখালী ছোট চৌরাস্তা সংলগ্ন একটি ভাড়ার ভবনের চলছে জেলা রেজিষ্ট্রি ও সদর উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রে অফিসের কাজ। ভাড়া দিতে হয় মাসিক ৬০ হাজার টাকার বেশি। জরাজীর্ণ ভবনের পাশেই রয়েছে একতলা একটি রেকর্ড রুম। যেকানে রয়েছে প্রায় ১ থেকে ১৫০ বছরের পুরোন বালাম বই ও রেকর্ড।

রেকর্ডের পরিমান বেশি হওয়ায় জেলা রেজিষ্ট্রি ও সদর উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের আনুমানিক ১৮০জন তল্লাশকারক, নকলনবীশ, সার্সার ও স্থায়ী কর্মচারী পূর্বের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে জীবন জিবিকার তাগিদে ঝুঁকির মধ্যে কাজ করে যাচ্ছে। অনেক সময় তাদের মাথায় উপর পলেস্তারা খসে পড়ে দূর্ঘটনার স্বীকার হয়েছে। যেকোন সময় ঘটতে পারে সভারের রানা প্লাজার মত দূর্ঘটনা। যদি কোন দূর্ঘটনা ঘটে তাহলে কে নেবে এই দায় ভার? যে দপ্তর থেকে প্রতিবছর সরকারের ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা রাজস্ব আসে সেই দপ্তরের অফিস ভবন এক যুগ ধরে পরিত্যাক্ত মেলেনি নতুন ভবন, ভাবতেই অবাক লাগে।

জেলা রেজিষ্ট্রি অফিসের তল্লাশিকারক সমিতির সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর হাওলাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই ভবনটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে।এই অফিসে জীবনের ঝুকি নিয়ে আমরা কাজ করি। এই ভবনটি যাতে তাড়াতাড়ি নির্মান করা হয় সে জন্য তল্লাশিকারকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

নকল নবিশ এ্যাসোসিয়েশন পটুয়াখালী জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক মোঃ ফারুক হোসেন জানান, ভবনটি ধসে পড়ার উপক্রম হলেও রুটি রুজির তাগিদে আমরা জীবনকে বাজি রেখে এখানে কাজ করে যাচ্ছি। সরকারের কাছে আকুল আবেদন যাতে এই অকেজো ভবন নির্মানের বরাদ্দ পেতে পারি এবং আমাদের কার্যক্রম সুন্দর ভাবে পরিচালনা করতে পারি।

পটুয়াখালী দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোঃ জিয়াউর রহমান জুয়েল মৃধা জানান, জেলা রেজিষ্ট্রি ও সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিস ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এই শুনি পাশ হয়েছে আবার শুনি এক নম্বরে আছে। কিন্তু ভবন নির্মানের বিষয়ে সঠিক খবর পাচ্ছিনা। তাই দ্রুত ভবন নির্মানের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জেলা রেজিষ্টার মোঃ কামাল হোসেন খান জানান, ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ২০১১ সালে এই ভবনটি পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়। এর পর থেকে শহরের ছোট চৌরাস্তা এলাকায় ভাড়া ভবন নিয়ে জেলা ও সদর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রতিমাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। রেকর্ড রুম ঐ স্থানে থাকায় তল্লাশকারক, নকলনবীশ ও স্থায়ী ১৮০ কর্মচারী জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে জনগনের স্বার্থে কাজ করছে। এবছর সরকারি ভবন নির্মানের তালিকায় পটুয়াখালী রেজিষ্ট্রি অফিস ভবন নির্মান অন্তর্ভূক্ত আছে। তবে এই ভবনটি দ্রুত নির্মান হলে অফিসের কার্যক্রমে যেমন সুবিধা হবে তেমনি জনসাধারনের ভোগান্তিও কমবে।