বগুড়ার স্ত্রী-সন্তান হত্যায় স্বামী-শ্বশুরের বিরুদ্ধে মামলা, খোঁজ মেলেনি শিশুর খন্ডিত মাথার

Posted on June 4, 2024

বগুড়া প্রতি‌নি‌ধি: বগুড়ায় আবাসিক হোটেলে বাবার হা‌তে খুন হওয়া ১১ মা‌সের শিশু আব্দুল্লা‌হেল রা‌ফির খ‌ন্ডিত মাথা এখনও মে‌লে‌নি। পু‌লিশ আসামী আজিজুল হক‌কে সা‌থে নি‌য়ে শহরের চেলোপাড়া এলাকার করতোয়া নদীতে শিশুটির সেই মাথা উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ।

এর আগে গত শ‌নিবার দুপু‌রে পু‌লিশ শহ‌রের বনানী এলাকার শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলে আশামনি ও তার ১১ মাস বয়সী ছেলে আব্দুলাহেল রাফির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। তবে রাফির মাথা নিখোঁজ ছিল। ঘটনার পরপরই পু‌লিশ ঘটনার সা‌থে জ‌ড়িত আজিজুল হক‌কে আটক ক‌রে থানায় নি‌য়ে যায়। প‌রে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার অভিযোগে স্বামী আজিজুল হক ও শ্বশুর হামিদুল হকের নাম উল্লেখ করে শাজাহানপুর থানায় এক‌টি হত‌্যা মামলা করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে দুই থেকে তিনজনকে। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে আজিজুলের শ্বশুর আশাদুল ইসলাম বাদী হয়ে বগুড়ার শাজাহানপুর থানায় এই মামলা করেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে শাজাহানপুর থানার এসআই হাসান হাফিজুর রহমান জানান, এই মামলায় দুই আসামী গ্রেপ্তার রয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
আশামনির স্বামী আজিজুল হক সেনা সদস্য হিসেবে চট্টগ্রামে চাকরি করেন। তি‌নি বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউট গ্রামের হামিদুল ইসলামের ছেলে।

পুলিশ জানায়, আজিজুল হক তার স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে গত শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলে রুম ভাড়া করেন। ওই সময় তমা ও মিরাজ পরিচয়ে হোটেলে ওঠেন। বাড়ি উল্লেখ করা হয় রংপুরের পীরগঞ্জ।

স্বজনরা জানায়, প্রায় তিন বছর আগে আজিজুলের সাথে বিয়ে হয় আশা মনির। রাফির জন্মগ্রহণের পর থেকে আশা তার বাবার বাড়ি নারুলীতে থাকেন। এর মধ্যে দুই মাসের ছুটিতে বাড়ি আসেন আজিজুল। ছুটি শেষে শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা তার। কিন্তু এর মধ্যে সন্ধ্যা সাতটার দিকে বনানীর ওই হোটেলে ওঠেন তারা। পরে রাত সাড়ে নয়টার দিকে হোটেল থেকে বের হন আজিজুল। পরে তার বউ ও ছেলে হারিয়ে গেছে বলে শ্বশুরকে সাথে নিয়ে বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজাখঁজি করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হাসান হাফিজুর বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল জানিয়েছেন রাফির মাথা কেটে করতোয়া নদীতে ফেলে দিয়েছেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করে মাথার সন্ধান পাওয়া যায়নি। আসামীদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। তি‌নি আরো ব‌লেন, এজাহা‌রে পা‌রিবা‌রিক কলহ এবং‌ যৌতুকের টাকা লেন‌দে‌নের বিষয়‌টি উল্লেখ করা হ‌য়ে‌ছে।

এদিকে, হত্যার কারণ সম্পর্কে আশামনির খালা মাফিয়া দাবি করেন, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য আশামনিকে চাপ দেয়া হচ্ছিল। আশার বাবা এ পর্যন্ত ৫ লাখ টাকাও দিয়েছেন। আরও এক লাখ টাকা দাবি করে আজিজুল। এই টাকা না পাওয়ার জেদেই ওদের মেরে ফেলেছে।

আশা মনির বাবা আশাদুল ইসলাম জানান, আমার মেয়েকে ও নাতিকে যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে। আজিজুলের ফাঁসি চাই।