গুণগতমানের চা রপ্তানি বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ সরকারের: প্রধানমন্ত্রী

Posted on June 4, 2024

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চা রপ্তানির পুরাতন ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সরকার উৎপাদনের পাশাপাশি গুণগতমানের চা রপ্তানি বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্বারোপ করেছে।

তিনি বলেন, বিশ্বের ১৩টি দেশে চা রপ্তানি করে ২০২৩ সালে প্রায় ২৭২ মিলিয়ন টাকা আয় হয়েছে। চা রপ্তানিতে উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে রপ্তানিতে নগদ ভর্তুকি প্রদান, শ্রেষ্ঠ চা রপ্তানিকারক ক্যাটাগরিতে জাতীয় চা পুরস্কার প্রদান, আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ, দেশীয় চায়ের প্রচার প্রচারণা বৃদ্ধিতে দূতাবাসগুলোকে আরও গতিশীল করাসহ নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ জুন) ‘জাতীয় চা দিবস’ উপলক্ষ্যে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশে চতুর্থবারের মত এবছর ‘জাতীয় চা দিবস-২০২৪’ উদযাপন হচ্ছে জেনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য-‘স্মার্ট বাংলাদেশের সংকল্প, রপ্তানিমুখী চা শিল্প’ যা সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।”

তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪ জুন প্রথম বাঙালি হিসেবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে যোগদান করে বাঙালি জাতিকে সম্মানিত করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে দেশের চা শিল্পে অসামান্য অবদান রাখেন। তাঁর প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনায় ১৯৫৭ সালে শ্রীমঙ্গলে চা গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং ঢাকার মতিঝিলে চা বোর্ডের কার্যালয় স্থাপিত হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা চা শ্রমিকদের শ্রমকল্যাণ যেমন বিনামূল্যে বাসস্থান, সুপেয় পানি, প্রাথমিক শিক্ষা এবং রেশন প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য বাগান মালিকদের নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি চা শ্রমিকদের বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেন এবং ভোটাধিকার প্রদান করেন। চা শিল্পে জাতির পিতার অবদান এবং চা বোর্ডে যোগদানের তারিখকে স্মরণীয় করতে ৪ জুনকে ‘জাতীয় চা দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক গৃহীত নানাবিধ উন্নয়ন কর্মকা-ের ফলে দেশের চা শিল্প এখন টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালে দেশে রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়েছে। চা উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার বড় বাগানের পাশাপাশি সমতলে ক্ষুদ্রায়তন চা আবাদে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। গত দুই দশকে দেশের উত্তরাঞ্চলে সমতল ভূমিতে চা আবাদে বিপ্লব ঘটেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে পঞ্চগড় জেলায় প্রথম চা চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর ও রংপুর জেলায় বাণিজ্যিকভাবে চা চাষে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। চা চাষের ফলে এসব জেলায় মানুষের দারিদ্র্যবিমোচনসহ আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এ অঞ্চলের চা শিল্পের গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২৩ সালে সরকার পঞ্চগড়ে দেশের তৃতীয় চা নিলাম কেন্দ্র চালু করে। চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে দৈনিক মজুরি বৃদ্ধিসহ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন ভাতা ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশের অন্যতম স্তম্ভ হলো স্মার্ট অর্থনীতি। আমি প্রত্যাশা করি, চা শিল্পে স্মার্ট কমার্স বাস্তবায়ন ও বহুমুখী রপ্তানি বৃদ্ধিতে উৎপাদনকারী ও বিপণনকারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলে আন্তরিকভাবে কাজ করবে।’

প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় চা দিবস-২০২৪’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
সূত্র-বাসস।