ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে পৌনে তিন কোটি গ্রাহক বিদ্যুৎহীন

Posted on May 28, 2024

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের ২ কোটি ৭০ লাখ ৩১ হাজার ৯৩১ জন গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থারও ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে কেবল পল্লী বিদ্যুতেরই ২ কোটি ৬৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৫০ জন গ্রাহক আছেন বলে সোমবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ বিভাগের বার্তায় জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ২ কোটি ৬৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৫০ জন গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৮১ জন গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রাথমিকভাবে ৯১ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি বিদ্যুৎ অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে, মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ফেসবুক পেজে জানানো হয়, কেন্দ্রীয়ভাবে ২৪ ঘণ্টাব্যাপী কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে তদারকি করছে পল্লী বিদ্যুৎ। এছাড়া জেলা পর্যায় ও সমিতি ভিত্তিক কন্ট্রোল রুম বসানো আছে। পরিবহন ঠিকাদারদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও ওজোপাডিকো এলাকায় সব ধরনের কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করে রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ঝড় বা বাতাস কমার সঙ্গে সঙ্গেই বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করা হবে বলে জানানো হয় সেই পোস্টে।

এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) এবং ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) সূত্র জানায়, গত রবিবার বিকাল থেকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ২ কোটি ৭০ লাখ, ওজোপাডিকো এলাকায় সাড়ে ৪ লাখ, পিডিবি এলাকায় প্রায় ১ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। কিছু গ্রাহকের সংযোগ গতকাল বিকালে পুনরায় দেওয়া গেলেও সরবরাহ এখনো নিরবচ্ছিন্ন হয়নি। দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনে ক্ষয়ক্ষতি মেরামত করে সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অন্তত তিন দিন সময় দরকার হবে। কিছু এলাকায় আরও বেশি সময় লাগতে পারে। তবে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অধিকাংশ গ্রাহকের স্থাপনায় আজ মঙ্গলবার পুনরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা যাবে।

বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, খুলনা, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরিশালের অধিকাংশ গ্রাহক এবং ফেনী, কক্সবাজারসহ কয়েকটি জেলায় আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ জেলাগুলোতে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে, তার ছিঁড়ে এবং সঞ্চালন ও বিতরণ লাইনে গাছপালা ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়েছে। সাবধনতাবশত ঘূর্ণিঝড় আঘাতের আগেই অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে বিতরণ সংস্থাগুলো। ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মধ্যে ৬৫টি সমিতিতে গ্রাহক সংযোগ আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ আছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহও কমেছে। বিদ্যুতের সরবরাহ চাহিদা কমে যাওয়ায় উৎপাদন কমিয়েছে পিডিবি। রবিবার গড় উৎপাদন অর্ধেকে নামে। গতকাল সোমবার দুপুর ৩টায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটে নেমে আসে।