শ্বাসরোধ করে শিশু কন্যাকে হত্যা দায় স্বীকার করলেন মা

Posted on May 6, 2024

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে দোষ স্বীকার করে নিজের শিশুকন্যাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পৈশাচিক বর্ণনা দিয়েছেন মা পপি খাতুন। সাত বছরের শিশুকন্যা মাইশাকে হত্যার পর নিজেকে বাঁচাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাইশা মারা গিয়েছে এমন নাটক সাজিয়ে মোবাইলফোনের চার্জার গলায় জড়িয়ে রাখেন।

হত্যাকারী মা পপি খাতুন আলমডাঙ্গা ভোগাইল বগাদি গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে।

সোমবার (৬ মে) সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বিগত ২৯ ফেব্রুয়ারি সকালে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভোগাইল বগাদী গ্রামের মাইশা খাতুন নামে সাত বছর বয়সি এক শিশুর মৃত্যু হয়। মোবাইল চার্জার নিয়ে খেলতে গিয়ে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় বলে ধারনা করা হয়। তার মায়ের চিৎকারে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঐদিন চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। অতঃপর অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আতিকুর রহমান জুয়েল রানা মামলার তদন্ত করার সময় দুর্ঘটনামূলক স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হলে ময়না তদন্তের জন্য জানান।

ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় শিশুকন্য মাইশার শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বিদ্যুতস্পৃষ্টে মৃত্যুর প্রমান পাওয়া যায়নি। এরই ভিত্তিতে গত ৩ মে নিহত মাইশার নানা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমানসহ মামলার তদন্তকারীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যেয়ে মা পপি খাতুনের কথা বার্তায় সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বেচ্ছায় এই হত্যার দায় স্বীকার করেন। তিনি তার পারিবারিক কারণে নিজেই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন বলে জানান।

হত্যাকারী পপি খাতুন আগের পারিবারিক ব্যক্তি জীবন, একাধীক বৈবাহিক জীবন আবার বিবাহ বিচ্ছেদ এবং বিবাহ বিচ্ছেদ পরবর্তী সময়ের বিভ্ন্নি তথ্য পাওয়া গেছে যা এই হত্যাকান্ডের নেপথ্যে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। মাইশা খাতুন ভোগাইল বগাদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী।মা-বাবার বিয়ে বিচ্ছেদ হলে মায়ের সাথে মাইশা নানা বাড়িতেই থাকতো।