ফ্রা লুকা ডি প্যাসিওলি’র ‘পার্টিকুলারিস ডি কম্পিউটিস এট স্ক্রিপচার্স’ (এ্যাকাউন্টিং বুকস্ এ্যান্ড রেকর্ডস) এর অধ্যাপক জেরেমি ক্রিপসকৃত ইংরেজি অনুবাদ থেকে বঙ্গানুবাদ

Posted on May 4, 2024

এন জি চক্রবর্তী
(পূর্ব প্রকাশিতের পর) ১৮তম অংশ

দ্বিতীয় ভাগ।
তের অধ্যায়।
হিসাবের খাতা নম্বর তিন: লেজার।
লেজার ও তার সূচিপত্র কিভাবে তৈরি করতে হয়।

লেনদেনগুলো যখন একবার জার্নালে তোলা হয়ে গেলে সেখান থেকে যে খাতায় তোলা হবে Ñ তার নাম লেজার। একটা জার্নাল কমপক্ষে দুটো লেজারে তুলতে হয়। তাই লেজারের সংখ্যা হয় বেশি। আর সেজন্য লেজারে রক্ষিত হিসাবের যে শিরোনাম তার আদ্যাক্ষর সম্বলিত একটা সূচিপত্র, আর ওই সমস্ত হিসাব খাতের আরেকটা তালিকা (এ্যাকাউন্টস্ চার্ট) Ñ এ দুটোই জরুরি। ফ্লোরেন্সে এটাকে বলে ’লেআউট’। প্রতিটি ডেবিট ও ক্রেডিট এন্ট্রি সুশৃংখলভাবে সূচিতে অন্তর্ভুক্ত হবে আর প্রতিটি হিসাবখাতের পৃষ্ঠা নম্বর উল্লেখ করতে হবে। তাই যে হিসাব খাতের শিরোনামের শুরু ইংরেজি ’এ’ অক্ষর দিয়ে সে পাতাটি হবে লেজারের প্রথম পাতা। লেজারের প্রতিটি পৃষ্ঠায় ক্রমিক নম্বর দিয়ে নিন যাতে সেভাবেই জার্নালে সংশ্লিষ্ট লেজার পৃষ্ঠা নম্বর এবং লেজারে জার্নালের ক্রমিক নম্বর - এভাবে ক্রস রেফারেন্স থাকে। যাতে একটা পেলে আরেকটা তাড়াতাড়ি খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়। আগের মতই পৃষ্ঠার মাথায় তারিখের শুরু হবে খৃষ্টাব্দ দিয়ে।

লেজারের প্রথম পাতাটি ক্যাশ বা নগদের জন্য সংরক্ষিত রাখুন যার ব্যালেন্স স্বাভাবিকভাবে হবে ’ডেবিট’। যেহেতু লেনদেনগুলির বেশিরভাগই ক্যাশ বা নগদে সংঘটিত হয়, তাই মেমোরেন্ডাম আর জার্নালে তারই দাপট থাকবে তাতে আর আশ্চর্য কি। লেজারের চেহারাটা হবে এরকম:

দ্বিতীয় ভাগ।
চৌদ্দ অধ্যায়।
ডাবল এন্ট্রি।
জার্নাল থেকে লেজার পোষ্টিং: কিভাবে প্রতিটি জার্নালের দুটি করে লেজার এবং পরস্পরের ক্রস রেফারেন্সিং করতে হয়।

ইতিমধ্যে যে জাণর্ ালগুেেলা তৈরি করে ফেলেছেন তার প্রতিটির জন্য আপনাকে অবশ্যই সবসময় লেজারে দুটো করে এন্ট্রি দিতে হবে। জার্নালে আমরা লক্ষ্য করেছি যে প্রতিটি ডেবিটের আগে বসে ’টু’ আর ক্রেডিটের আগে ’বাই’। এই ডেবিট ক্রেডিটের প্রতিটি লেজারে এন্ট্রি দিতে হবে। লেজারে ডেবিট বাঁদিকে আর ক্রেডিট ডানদিকে লিখুন। লেজারের যে পৃষ্ঠায় জার্নালের ডেবিট খাতটি পোষ্টিং দেয়া আছে সে পৃষ্ঠা নম্বরটি জার্নালের রেফারেন্সের কলামে লিখুন আর ঠিক এর বিপরীতভাবে ক্রেডিট পোষ্টিংটির জন্য জার্নালের রেফারেন্সের কলামে লেজারের সেই পৃষ্ঠা নম্বরটি লিখুন। এভাবে লিখে জার্নালের রেফারেন্সের কলামটি ক্রস রেফারেন্স দিয়ে দিয়ে ভরে ফেলুন। আর আপনি ক্রেডিট এন্ট্রি দিলে সংগে সংগে তার ডেবিট এন্ট্রিও সম্পূর্ণ করুন। ট্রায়াল ব্যালেন্সের দুদিকের যোগফল মিলে যাওয়ার এটা প্রধান শর্ত।

ডেবিট ক্রেডিট সমান না হলে ফাইনাল ব্যালেন্স মিলে যাওয়ার প্রশ্ন উঠে না। এন্ট্রি যতই হোক ধরা যাক দশ হাজারেরও বেশি তবুও তার ডেবিট ক্রেডিটের যোগফল মিলতে হবেই। না হলে ধরে নিতে হবে লেজার পোষ্টিংএ নির্ঘাত কোন না কোন ভুল রয়েছে।

যে জার্নালের পোষ্টিং কমপ্লিট, তার নিচে দুটি লাইন টানুন। প্রথম লাইনটি বোঝাবে যে লেজারে ওটার ডেবিট পোষ্টিং হয়ে গেছে আর দ্বিতীয় লাইনটি ক্রেডিট পোষ্টিং কমপ্লিট বোঝানোর জন্য। সময় বাঁচানো কিম্বা পরিশ্রম কমানোর জন্য এ্যকাউন্ট্যান্ট একসাথে দুটো জার্নালের কাজ সারতে পারে। তাতে দোষের কিছু নেই। তবে এতে দেখা যায় এক জার্নালে দুটো ডেবিট কিন্তু ক্রেডিট একটা। সেখানেও দুটি লাইন টানতে হবে। প্রথমটি লেজারে দুটো ডেবিট আর দ্বিতীয়টি একমাত্র ক্রেডিট পোষ্টিংটির কথা বোঝাবে। এবার কিভাবে লাইন দুটো টানতে হবে তা দেখাচ্ছি:

উপরের জার্ণালের সবশেষে দেওয়া দুটো দাগের প্রথমটি লেজারের ডেবিট পোষ্টিং আর দ্বিতীয়টি লেজারের ক্রেডিট পোষ্টিং কমপ্লিট হওয়ার চিহ্ন। রেফারেন্স কলামে দুটো রেফারেন্সই লিখুন। প্রথম ও দ্বিতীয় রেফারেন্স দুটো যথাক্রমে লেজারের পৃথক দুটো পৃষ্ঠাকে নির্দেশ করে। দুটো রেফারেন্সের মাঝখানে আবার একটা দাগ দিয়ে পৃথক করতে যাবেন না যেন, যেমনটি কোন কোন পন্ডিত করে থাকেন। তাতে হয় কি দুটোকে মিলিয়ে ভগ্নাংশের মত হয় দেখতে, বিশ্বাস না হয় নিচে তাকিয়ে দেখুন:

যত্ন নিয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে লিখুন। লে-আউটের ভিতরে যখন লেখা শেষ করবেন তখন দেখবেন লেখাটাকে কতটা স্মার্ট লাগছে। যেখানে যাইই লিখুন সংক্ষিপ্তভাবে লিখুন। তারিখটা তারিখের জায়গায় না লিখে অন্য জায়গায় লিখবেন না, লিখলে প্রয়োজন যখন হবে তখন তারিখটাই আর খুঁজে পাবেন না। কোন একটি মাত্র বইতে হিসাব রাখার সমস্ত নিয়মকানুন ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। হিসাবরক্ষকেরা সচরাচর চালাকচতুরই হয়। ডেবিটের পরে ক্রেডিট এন্ট্রি দিন; হিসাবের খাতায় অনর্থক খালি জায়গা রাখতে যাবেন না বা কোন লাইন ফাঁকাও রাখবেন না।

যেক্ষণে ডেবিটের জন্ম হলো, সংগে তার যমজ ক্রেডিটটাও জন্মালো। সুতরাং চলবে যখন তখন একসংগেই চলবে।