মিয়ানমার থেকে ফিরছেন ১৭৩ বাংলাদেশি, অপেক্ষায় স্বজনরা

Posted on April 24, 2024

মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিতোয়ে কারাগার থেকে আজ ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরছেন। বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১১ টা ৩০ মিনিটের দিকে তাদের বহনকারী জাহাজ কক্সবাজার নুনিয়াছড়া ঘাটে পৌঁছাবে।

কারাভোগ করা ১৭৩ বাংলাদেশিদের আত্মীয়-স্বজনরা কক্সবাজার নুনিয়াছড়া ঘাটে অপেক্ষা করছে। বেশিরভাগ স্বজনরা বলছেন, মালেশিয়া যাওয়ার কথা বলে দালালরা মায়ানমারে দিয়ে আসছে।

অপেক্ষা করা স্বজনদের মধ্যে টেকনাফ সদরের রাজারছড়া এলাকার মোস্তাক আহমেদ বলেন, আমার ছেলে নোমান ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি, হোয়াইক্ষ্যং উনছিপ্রাং এলাকার হোসাইন দালাল আমার ছেলেকে মালেশিয়া পাঠানোর নামে মায়ানমারে নামিয়ে দেয়। ৩ মাস ধরে ছেলের সন্ধান পাইনি। পরে শুনতে পেলাম ছেলে মায়ানমার কারাগারে আছেন। অনেকদিন পরে ছেলেকে দেখতে পাবো।

আরেক স্বজন হোয়াইক্ষ্যং এলাকার বাসিন্দা রশিদ আহমদ বলেন, আমার দুই ছেলে, মুক্তার আহমেদ ও আল মামুনকে মালেশিয়া নেওয়ার কথা বলে মায়ানমারের কাছাকাছি নামিয়ে দেয়। পরে মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি আটক করে। দালাল মালেশিয়া পৌঁছেছে বলে ৩ লাখ টাকা নেন। ছেলের সাথে কথা বলতে চাইলে দালাল বিভিন্ন অজুহাত দেখান। পরে দুই ছেলে মায়ানমার থেকে কল করে জানায় তারা মায়ানমারের কারাগারে আছেন। ছেলের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ছেলেদের যে ফিরে পাবো কোনোদিন কল্পনা করেনি।

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে এসব বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে মিয়ানমারের নৌ-জাহাজ চিন ডুইন সিতোয়ে বন্দর ত্যাগ করেছে। জাহাজটি রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হওয়া মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে কক্সবাজার আসছে।

বাংলাদেশি ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার, ৩০ জন বান্দরবান, সাতজন রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে বাসিন্দা আছেন।

জানা যায়, বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্রুত ও সহজে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনায় দূতাবাস মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থানরত ১৪৪ জন ‘যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিক, যাদের কারাভোগের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে বা ক্ষমা পেয়েছেন’ তাদেরকে সিতোয়ে কারাগারে আনতে উদ্যোগ নেয়।

পাশাপাশি আরও ২৯ জন যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিক, যারা এখনো কারাভোগরত কিংবা বিচারাধীন, একই সঙ্গে তাদেরও মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি মিয়ানমারের কাছে তুলে ধরা হয়। যার ভিত্তিতে সাজা মওকুফ করে তাদেরও দেশে পাঠানো হয়।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ ৩ অক্টোবর দুই দেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমারে কারাভোগ শেষ করা ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে পাঠানো হয়।