দুই বোনের বিষ্ময়কর মিল ও সাফল্য

Posted on April 2, 2024

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: কাছাকাছি সময়ে জন্ম, এক সঙ্গে বেড়ে ওঠার গল্প। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও কলেজে পড়েছেন একই প্রতিষ্ঠানে। সবক্ষেত্রে দুইজনের ফলাফলও একই। আপন দুই বোন এবার চান্স পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এত কিছু মিল থাকলেও এবার অমিল ঘটবে দুজনের। তবে বিস্ময়কর সাফল্য দুজনের।

কারণ একজন চান্স পেয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে আর অপরজন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)। দুই বোনের এমন অভাবনীয় সাফল্যের খবরে পুরো এলাকায় প্রশংসায় ভাসছেন তাঁরা।

তাঁরা হলেন-চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আমিরাবাদের বাসিন্দা মুহাম্মদ শওকত আলী ও মরজিনা বেগম দম্পতির সন্তান তাসনিম তাসনুভা সুহা ও সামিহা তাবাসসুম সিমিন।

এই দুই বোনের সফলতার এ গল্প স্কুল, কলেজেই শেষ নয়। উচ্চ মাধ্যমিক শেষে দু'জনেই কৃতিত্বের সাথে পা রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতেও। এরমধ্যে তাসনিম সুহা এ বছর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ৩৪৯ তম স্থান অধিকার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায়ও ভালো ফলাফল করেছে।

অন্যদিকে সামিহা তাবাসসুম সিমিন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় ৬৭৩ তম স্থান অর্জন করে কেমিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়েছে। সিমিন ইঞ্জিনিয়ারিং গুচ্ছ (চুয়েট কুয়েট রুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায়ও ১৬৩ তম স্থান এবং আর্কিটেকচার এ ১৫ তম স্থান অর্জন করেছে।

একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সটাইল (বুটেক্স) এবং মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) ভর্তি পরীক্ষায় যথাক্রমে ৩১৪ তম এবং ৬৩০ তম স্থান অর্জন করেছে।

তাঁরা দুই বোন ২০২১ সালে চট্টগ্রামের ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। পরে দুই বোন চট্টগ্রাম কলেজ থেকে ২০২৩ সালে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। উভয়ে এসএসসি এবং এইচএসসি তে সরকারি বৃত্তি লাভ করেন। দুইবোনের অভাবনীয় সাফল্যে শুধু আমিরাবাদ গ্রাম নয়, গোটা চট্টগ্রামে যেন আনন্দের জোয়ার বইছে।

তবে দুজনের লক্ষ্য থাকবে একই। এখন তাঁদের শুধুই এগিয়ে যাওয়ার এবং স্বপ্ন পূরণের পালা। সামনে অনাগত বর্ণিল জীবনের হাতছানি বলে মন্তব্য করে সুহা-সিমিনের গর্বিত বাবা শওকত আলী বলেন, 'আমার এ দুই মেয়ে লেখাপড়া ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। আজকের এ সাফল্য তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমেরই ফসল। তাঁরা এমন ভালো ফলাফল করবে বলেই আমাদের বিশ্বাস ছিল। তাঁদের অসামান্য সাফল্যে আমরা আজ আনন্দিত এবং গর্বিত।'