আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে অবৈধ ইট ভাটা

Posted on March 21, 2024

মোঃ বাদল হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি।। পটুয়াখালী সদর উপজেলার ১০নং মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বাজারঘোনা গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান বশির সিকদার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এবং পরিবেশ অধিদপ্তরকে তোয়াক্কা না করেই জনবসতি এলাকা তথা কমপক্ষে ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এলাকায় এ অবৈধ ইট ভাটা তৈরী করেন।

ইতিপূর্বে এ বিষয় মহামান্য হাইকোর্ট এক আদেশে উক্ত ইট ভাটা ভেঙে ফেলার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর এবং স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিলে গত ২৩শে ফেব্রুয়ারী এক মৌখিক আদেশে মালিক বশির সিকদারকে উক্ত ইট ভাটা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিলেও কোন কর্নপাত না করেই চলছে ইট ভাটার কার্যক্রম।

এ বিষয় এলাকাবাসীর পক্ষে মোঃ রাজ্জাক বয়াতী মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন জার নাম্বার ৪৪৫১/ ২০২১ উক্ত পিটিশনের আলোকে মহামান্য হাইকোর্ট ষাট দিনের মধ্যে উক্ত ইট ভাটা ভেঙে ফেলার নির্দেশ প্রদান করলেও অদৃশ্য কারনে অদ্যাব্দি চলছে ইট ভাটা। এ বিষয় পূণরায় মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন জার নাম্বার ২৫/২০২৪ এর ফলে আবারও উক্ত ইট ভাটা জরুরী ভাবে ভেঙে গুরিয়ে ফেলতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা প্রদান করেন। উক্ত আদেশ কার্যকর করার লক্ষ্যে পিটিশন দাখিলকারী রাজ্জাক বয়াতী গত ৫ ফেব্রুয়ারী পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পরিবেশ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক পটুয়াখালী বরাবরে লিখিত আবেদন করেন। আবেদনের কপি এবং মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের কপি পেয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায় যে, উক্ত ইট ভাটার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যদিও আদালতের আদেশের কপি মালিক বশির সিকদার এবং জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ইতিমধ্যেই পাঠানো হলেও কেন ভেঙে ফেলা হচ্ছে না অবৈধ ইট ভাটা এ নিয়ে জনমনে নেতিবাচক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই কিভাবে চলে আসছে এ ইট ভাটা?

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মাত্র কয়েকশো মিটারের মধ্যেই জনবসতিসহ পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ইট ভাটার কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকে পুরো এলাকা ফলে স্কুল মাদ্রাসাগামী কোমলমতি শিশুদের শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এলাকার অনেকেই। এ বিষয় যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী বলছে অদৃশ্য ক্ষমতাবলে বশির সিকদার এ অবৈধ ইট ভাটা পরিচালনা করে আসছে, কি এমন অদৃশ্য ক্ষমতা যার কারণে উচ্চ আদালতের আদেশকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চালাচ্ছেন ইট ভাটা। এলাকাবাসীর সুরক্ষা কোমলমতি শিশুদের প্রতি মহানুভবতা দেখিয়ে এবং উচ্চ আদালতের রায় কার্যকর করার লক্ষ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান,সেই সাথে অবৈধ স্থাপনাটি ভেঙে গুরিয়ে দিয়ে আদালত অবমাননাসহ এলাকার মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টিকারী বশির সিকদার এর কঠিনতম শাস্তির দাবী জানান।

এ বিষয় পটুয়াখালী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা.সঞ্জীব দাস বলেন ইতিপূর্বেই আমি আদালতের রায় বাস্তবায়নে উক্ত ইট ভাটা ভেঙে গুরিয়ে দিয়েছি এবং পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা করেছি, তবে যদি পূণরায় সেই ইট ভাটা চালু করে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, ইতিপূর্বে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ অভিযান চালিয়ে ভেঙে দিয়েছিলাম, কারণ ঐ ইট ভাটার কোন ছার পত্র নেই এমনকি বৈধ কোন কাগজ পত্রই নেই, যেহেতু জানতে পারলাম যে,পূণরায় ইট ভাটা চালু করা হয়েছে তো অবশ্যই আমরা ভাটা মালিক বশির সিকদার এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।