৯ কোটি টাকার ব্রীজের কাজ শেষ হওয়ার আগেই পিলারে ফাটল

Posted on March 19, 2024

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের চর জোকনালা গ্রামে হুড়াসাগর নদীর উপর ৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মানাধীন ব্রীজের কাজ শেষ হওয়ার আগেই একটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাতের আধাঁরে ওই ফাটল মেরামত করতে গেলে গ্রামবাসী তাতে বাধা দিয়ে ব্রীজের নির্মান কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

চর জোকনালা গ্রামের রহমান আলী জানান, রবিবার রাত ১টার দিকে ব্রীজের নিচে মোবাইলের আলো দেখে আমরা চোর মনে কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সেখানে যাই। ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন পালানোর চেষ্টা করলে তাদের ধরে ফেলি। এরপর তারা জানায় তারা ব্রীজের পিলারের ফাটল মেরামত করতে এসেছে।

এ বিষয়ে রাতের বেলায় কাজ করতে আসা রাজমিস্ত্রি শফিকুল ও স্বাধীন জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে রাতের বেলায় বালু ও সিমেন্ট দিয়ে পিলারের ফাটলের স্থান মেরামত করতে গিয়েছিলাম।'

স্থানীয় ভাঙ্গাবাড়ী ইউপির ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল ইসলাম তুহিন জানান, ব্রীজটি নির্মানে নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারনে নির্মান কাজ শেষ হওয়ার আগেই ব্রীজের ৪টি পিলারের মধ্যে একটির নিচের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঠিকাদার ও দায়িত্বরত ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তিনি।

এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা এলজিইডি অফিসের সার্ভেয়ার রোকনুজ্জামান জানান, ২০২১ সালে ব্রীজটির নির্মান কাজ শুরু হয়। দায়িত্বরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী অন্যত্র বদলী হয়ে যাওয়ায় ২০২৩ সাল থেকে আমি ব্রীজের নির্মানকাজ দেখভাল করছি। ব্রীজের ওই পিলার আমি দায়িত্ব পাওয়ার অনেক আগেই নির্মান হয়েছে। যখন পিলার নির্মান হয়েছে, তখন সেখানে অনেক পানি ছিল। বর্তমানে কাজের সুবিধার্থে সেচ দেওয়ার পর ফাটলের স্থানটি নজরে আসে। গ্রামবাসীর বাধার কারনে শুক্রবার থেকে নির্মান কাজ বন্ধ রয়েছে। বেলকুচি উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার ছুটিতে ঢাকায় রয়েছেন। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ও সাগর কনষ্টাকশন জেবি ব্রীজের নির্মান কাজ করছে।

সাগর কনষ্টাকশনের প্রোপ্রাইটার নুরুল ইসলাম জানান, আমাদের লাইসেন্স ব্যবহার করে ঠিকাদার জহরুল ইসলাম ব্রীজের কাজটি করছেন। বর্ষা মৌসুমে স্টীলের ফর্মা দিয়ে পিলার ঢালাই করার সময় হানিকম হওয়ায় সমস্যাটি দেখা দিয়েছিল। পরবর্তীতে প্রকৌশলীদের পরামর্শে পানি সেচে পিলারটি মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। গ্রামবাসী এ কাজে বাধা দিতে পারেন এ জন্য পিলারটি মেরামেতর জন্য রাতে মিস্ত্রি লাগানো হয়েছিল।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম জানান, হুড়াসাগর নদীর উপর নির্মানাধীন ব্রীজের পিলারের সমস্যার কথা শুনেছি। সোমবার সরজমিন গিয়ে বিষয়টি দেখবো। তারপর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।'