আগুনে পুড়ে ছাই রুপালীর শেষ সম্বল দুধের গাভীটি!

Posted on March 7, 2024

শহীদুজ্জামান শিমুল, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার কলারোয়া মশা তাড়ানোর সাজাল থেকে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় অসহায় রুপালী খাতুনের শেষ সম্বল দুধের গাভীটি পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। একই সাথে আগুনে পুড়ে শেষ হয়েছে ঘরে থাকা আসবাবপত্র, চাউলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল সামগ্রী।

গত ৩ মার্চ মধ্যরাতে কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের দামোদরকাঠি গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

রুপালী খাতুনের স্বামী আব্দুস সালাম দামোদরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় ভ্যান চালক। বছর খানেক আগে রুপালী খাতুন অন্যের বাড়ীতে কাজ করে অর্থ জমিয়ে একটি দুধের গাভী ক্রয় করেন। ভ্যান চালক স্বামীর তেমন রোজগার না থাকায় গাভীটির দুধ বিক্রির টাকায় পরিবারের সকল খরচ চলতো তাদের।

রপালী খাতুন ও সামাল দম্পতির দুইটি ছেলের মধ্যে বড় ছেলে তানভীর শেখ, তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী ও ছোট ছেলে অনিক শেখ, সে স্থানীয় কলারোয়া কলেজে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র।

রুপালী খাতুন বলেন, রোববার মধ্যরাতে হঠাৎ দেখতে পায় রান্না ঘরসহ গোয়াল ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। তখন আমার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে পানি দিয়ে আগুন নিভানোর চেষ্টা করলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরে দেখা যায় আমার উপার্জনের শেষ সম্বল দুধের গাভীটি পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। গাভীর বাচ্চাটা শরীরের অধিকাংশ জায়গা পুড়ে গেছে। রান্নাঘরে খাওয়ার জন্য চাউল রাখা ছিল সব পুড়ে গেছে। একই সাথে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল সামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গাভীটার দাম প্রায়ই দেড় লাখ টাকার কাছাকাছি ছিলো।

কাঁদতে কাঁদতে তিনি আরও বলেন, দুধ বিক্রির টাকা থেকে সংসার চালাতাম এবং প্রতিবন্ধী ছেলে সহ ছোট ছেলেটার পড়ালেখা চালাতাম। শেষ সম্বলটুকু পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে!

হেলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, রূপালী বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে অর্থ জমিয়ে একটি দুধের গাভী কিনেছিলো। গাভী থেকে যে অর্থ আসতো সেটা দিয়ে সংসার চালাতো ও ছেলের পড়াশুনা করাতো। কিন্তু আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে তার গাভীটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এবং আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে তাকে সহযোগিতা করবো।

কলারোয়া উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অফিসের ফায়ার ফাইটার মামুন হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে তাৎক্ষণিক আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও অগ্নিকাণ্ডে রূপালী খাতুনের রান্নাঘর ও গোয়ালঘর পুড়ে গেছে এবং তার একটা দুগ্ধ গরু পুড়ে মারা গেছে। ধারনা করা হচ্ছে এতে প্রায় তার তিন লাখ টাকার কাছাকাছি ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, অগ্নিকাণ্ডের বিষয়টি জানামাত্র ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। পুলিশ গিয়ে বিষয়টি দেখেছে । ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ভাষ্য অনুযায়ী মশা তাড়ানোর আগুন থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে।