চকরিয়ায় ১৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ

Posted on March 3, 2024

মোহাম্মদ রিদুয়ান হাফিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি: বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কক্সবাজারের চকরিয়ায় ১৮ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভায়১৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন আবাদি জমির পরিচর্যাসহ নানা আনুষঙ্গিক কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রায় লক্ষাধিক কৃষক পরিবার।

চকরিয়া উপজেলার কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা যাতে অর্জিত হয় সেজন্য মাঠপর্যায়ে প্রতিটি ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের নানা পরামর্শসহ সার্বিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। তালিকাভুক্ত প্রান্তিক কৃষকদের সার, বীজসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রণোদনা হিসেবেও দেওয়া হয়েছে আগেভাগে। এতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বোরো আবাদের ধানের চারা রোপণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে দুই উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার আবাদী জমিতেও।

চকরিয়া উপজেলার প্রান্তিক কৃষক এবং কৃষিবিভাগের মধ্যে দিয়ে আরো জানা যায়, পার্বত্য অববাহিকার মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা ও পালাকাটা–রামপুর পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত রাবার ড্যামের মাধ্যমে ধরে রাখা নদীর মিঠাপানির সরবরাহ দিয়ে বোরো আবাদসহ রকমারী সবজির চাষাবাদ চলছে। মিঠাপানির প্রবাহ এবং আবহাওয়া অনুকূলে পাওয়ায় এবারও বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, চকরিয়া পৌরসভা ও উপজেলার হারবাং, বরইতলী, কৈয়ারবিল, লক্ষ্যারচর, কাকারা, সুরাজপুর–মানিকপুর, বমু বিলছড়ি, ফাঁসিয়াখালী, ডুলাহাজারা, খুটাখালী, চিরিংগা, সাহারবিল, বিএমচর, পূর্ব বড় ভেওলা, পশ্চিম বড় ভেওলা, কোনাখালী, ঢেমুশিয়া ও বদরখালী ইউনিয়নে বোরো আবাদের অধীনে রোপন করা হয়েছে ব্রি–ধান ২৮, ব্রি–ধান ৫৮, ব্রি–ধান ৬৭, ব্রি–ধান ৭৪, ব্রি–ধান ৮৮, ৮৯, ৯২, ৯৯, বঙ্গবন্ধু–১০০ ও বীনা–১০ এবং হিরা, সিনজেন্টা, এসিআই ব্রাকের হাইব্রিড জাতের ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। তবে উফসি জাতের ধানের ফলন বেশি হওয়ায় এবারও সেই জাতের ধানের আবাদ বেশি পরিমাণে হয়েছে উপজেলায়। এ তথ্য জানিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা কৃষিবিভাগের উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রাজীব দে।

চকরিয়ার হারবাংয়ের পূর্ব বৃন্দাবনখিল গ্রামের কৃষক সালেহ আহমদ বলেন, নিজের ৫ একর জমিতে শ্রমিক দিয়েই ধানের চারা রোপণ করেছেন। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় মিঠাপানির সরবরাহ করা বেশ কষ্টকর। তাই সেচ টিউবওয়েল দ্বারা জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। এতে প্রতি কানি (৪০ শতাংশ) জমিতে সেচ বাবদ খরচ পড়েছে ২৫০০ টাকা।

ঢেমুশিয়ার কৃষক মোহাম্মদ আলী আহমেদ বলেন, শুষ্ক মৌসুমের শেষদিকে হলেও মাতামুহুরী নদীতে রাবার ড্যাম দিয়ে আটকানোর কারণে মিঠাপানির যথেষ্ট উপস্থিতি রয়েছে। এতে কৃষকেরা নির্বিঘ্নে বোরোর আবাদ সম্পন্ন করেছেন।

চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন বলেন, প্রতিবছরের মতো চকরিয়ার ১৮টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভায় ১৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বোরো আবাদ সম্পন্ন করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক তদারকি ও প্রণোদনার মাধ্যমে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আমাদের আশা।