যেভাবে বুঝবেন চোখে ছানি পড়ছে? প্রতিরোধের উপায় কী?

Posted on February 24, 2024

ডা. নুসরাত সুলতানা শিমু ।।

সাধারণত ছানি আকারে যত বড় হয়, দৃষ্টিসীমা তত অস্পষ্ট হয়ে আসে। বাইরের থেকে লেন্সে আসা আলোক রশ্মিকে ছানি প্রতিহত করে চারপাশে বিচ্ছিন্নভাবে ছড়িয়ে দেয় এবং লেন্সের পেছনের স্তর রেটিনাতে ফোকাস করতে বাধা দেয়। ফলে চোখের সামনে তৈরি হয় অস্পষ্ট ইমেজ। তাই মাথা ও চোখ ব্যথার পাশাপাশি চোখের ঝাপসা ভাব, দৃষ্টিসীমায় ক্রমাগত আলোর ঝলকানি কিংবা একই বস্তুর একাধিক অস্পষ্ট ইমেজ তৈরি হলে অবহেলা না করে চক্ষু চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

চিকিৎসা
ছানি রোগের একমাত্র চিকিৎসা সার্জারি। ওষুধ কিংবা চশমার সাহায্যে এর প্রতিকার সম্ভব নয়। সার্জারির মাধ্যমে একজন ছানি রোগীর হারানো দৃষ্টিশক্তি পুনরায় ফিরিয়ে আনা যায়। এ ক্ষেত্রে স্লিট ল্যাম্প এবং রেটিনার পরীক্ষা–নিরীক্ষার মাধ্যমে চক্ষু চিকিৎসক ছানির সমস্যাটি সঠিকভাবে নিরূপণ সম্পন্ন করেন।
ছানি রোগের সার্জারি দুইভাবে করা হয়। একটি হলো ফ্যাকোইমালসিফিকেশন বা সেলাইবিহীন ছানি অপারেশন। আরেকটি হলো স্মল ইন্সিশন বা সেলাইযুক্ত ছানি অপারেশন। সেলাইবিহীন ছানি অপারেশন বর্তমানে আধুনিকতম পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে ছানি রোগীর অস্বচ্ছ লেন্সটি গলিয়ে ছোট টুকরো করে বের করে দেওয়া হয়। তারপর ভেতরে প্রতিস্থাপন করা হয় নরম স্বচ্ছ কৃত্রিম লেন্স। ফলে রোগী ফিরে পায় তাঁর হারানো দৃষ্টি।

প্রতিরোধ
ছানি এমন এক রোগ যার কোন কার্যকরী প্রতিরোধ ব্যবস্থা এখনও প্রমাণিত হয়নি। তবে চোখের যত্নে কিছু পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

যেমন:
১. বয়স ৪০ এর কাছাকাছি এলেই প্রতি বছর চোখ পরীক্ষা করা।
২. ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
৩. প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সবুজ শাক সবজি ও ফল নিশ্চিত করা।
৪. নিয়মিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা।
৫. ধূমপান এবং মদ্যপান থেকে বিরত থাকা।
৬. সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত সানগ্লাস ব্যবহার করা।

লেখক: চিকিৎসক, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা