পিকনিকের টাকা না দেয়ায় অভিমানে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

Posted on February 20, 2024

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: প্রতিবেশীরা পিকনিকে যাবে। ছোট্ট কিশোরী মানিকা খাতুনের কোমল হৃদয়ে তাদের সাথে পিকনিকে যাওয়ার ইচ্ছে জাগে। এতে বাধ সাধে তাদের দরিদ্রতা। দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রী অসুস্থ থাকায় তার চিকিৎসার খরচ মেটাতে মনিকার বাবা রাজন আলীকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। ভ্যানচালক রাজন আলী ও তার ছেলে দিনমজুর মাসুদ রানার কাঁধে পুরো পরিবারের বোঝা। কিছুদিন আগে মনিকা খাতুনকে স্কুলে ভর্তি করতেও মাসুদ রানার অনেকগুলো টাকা খরচ হয়ে যায়। সংসারের টানাপোড়েনের মাঝে কিভাবে দেবে মনিকার পিকনিকে যাওয়ার ৫০০ টাকা। তাই তিনি তার বোন মনিকা খাতুনকে বলেছিলো সামনের বছর পিকনিকে যেতে। ভায়ের কথায় মনিকার কোমল হৃদয় গলেনি। অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টার দিকে নিজ ঘরের ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে পেঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত মনিকা খাতুনকে (১৪) উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা। তাকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মনিকাকে মৃত ঘোষণা করেন। সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হাসানুজ্জামান হাসান জানান, হাসপাতালে নেয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত মনিকা খাতুন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া গ্রামের মাস্টার পাড়ার রাজন আলীর একমাত্র মেয়ে। সে আলুকদিয়া রোমেলা খাতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিলো।

মনিকা খাতুনের ভাই মাসুদ রানা বলেন, প্রতিবেশিদের সাথে নাটোরের লালপুরে পিকনিকে যাওয়ার জন্য ৫০০ টাকা চাই মনিকা। আমার বাবা ভ্যানচালক এবং আমি দিনমজুরিতে একটা মুড়ির কারখানায় কাজ করি। আমার মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। সংসারের খরচ চালিয়ে এবং মায়ের চিকিৎসার খরচ করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। মনিকা আমাদের একমাত্র আদরের বোন, তাকে বলেছিলাম সামনের বার পিকনিকে যেতে। মনিকা কিছুতেই সে কথা শোনেনি। অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ সেকেন্দার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মনিকার মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সিদ্ধান্ত নেবেন। আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।