একুশে পদকপ্রাপ্তদের অনুসরণ করে তরুণরা সোনার বাংলা বিনির্মাণ করবে: প্রধানমন্ত্রী

Posted on February 20, 2024

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, এবারের একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণিজনের পথ অনুসরণ করে তরুণ প্রজন্ম জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি বাঙালির গৌরবময় ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে আমাদের ভাষা ও সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবে।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) একুশে পদক ২০২৪ প্রদান উপলক্ষ্যে এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পর্যন্ত মোট ৫৬৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও স্বনামখ্যাত প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদক প্রদান করা হয়েছে। ২০২৪ সালে মোট ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিককে এ পদকের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এবারে ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা রাখার জন্য দু'জন, ভাষা ও সাহিত্যে চারজন, শিল্পকলায় বারজন, শিক্ষায় একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি, সমাজসেবায় দু’জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এ পদক প্রদান করা হবে। যারা মরণোত্তর পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন, তাঁদের আত্মার শান্তি প্রার্থনা করে প্রধানমন্ত্রী পুরস্কারপ্রাপ্তদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “প্রতি বছর মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের স্মরণে একুশে পদক প্রদান আমাদের সকলকে জাতীয়তাবোধের চেতনায় ভীষণভাবে উজ্জীবিত করে। যুগে যুগে অধিকার সচেতন বাঙালি জাতির বীরত্বগাঁথা লিপিবদ্ধ হয়েছে লড়াই-সংগ্রাম ও আত্মোৎসর্গের মাধ্যমে অর্জনের ইতিহাসে। ভাষা আন্দোলনে বাঙালির আত্মত্যাগের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদের যে লড়াই শুরু হয়, তারই ধারাবাহিকতায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার বাসনায় পূর্ব বাংলার মানুষ একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়ে সফলতা লাভ করে। আমরা পাই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।’’

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি যে সকল বীর শহিদ আমাদের মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষা করতে প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন-তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্ব দানকারী সে সময়ের তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল ভাষা সৈনিকগণকে, যাঁদের দূরদর্শী ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে এবং চরম আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমাদের মা, মাটি ও মানুষের অস্তিত্ব রক্ষা হয়েছে।’’

একুশের শহিদগণ যেমন জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান, তেমনি দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সকল গুণিজন জাতির গর্ব ও অহংকার-এমনটি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও প্রকৃত গুণিজন পুরস্কার বা সম্মাননার আশায় কাজ করেন না, তবু পুরস্কার-সম্মাননা জীবনের পথ চলায় নিরন্তর প্রেরণা যোগায়। একুশের চেতনাকে ধারণ করে দেশের শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির বিকাশ এবং আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভূত অবদান রাখছেন, তাঁদের সকলের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা গৌরবময় একুশে পদক প্রদান করা হয়।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে প্রতি বছর বাংলাদেশের অল্প সংখ্যক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে জাতীয় পর্যায়ে তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদকে ভূষিত করা হতো। পদকপ্রাপ্তদের সম্মানী অর্থের পরিমাণও ছিলো যতসামান্য। আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য ব্যক্তিদের পুরস্কার হিসেবে প্রদত্ত অর্থের পরিমাণ কয়েক দফা বৃদ্ধি করে গত ২০২০ সালে আমরা চার লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।

জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে গত ১৫ বছরে দেশের আর্থসামাজিক খাতের প্রতিটি ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশকে আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি। বর্তমানে আমরা ২০ বছর মেয়াদি দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। আমাদের জনগণ, অর্থনীতি, সরকার ও সমাজব্যবস্থা পুরোটাই হবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর।’’ সূত্র-বাসস।