কোম্পানি সেক্রেটারি ছাড়াই চলছে ফ্যামিলিটেক্স

Posted on February 18, 2024

রফিকুল ইসলাম (রাব্বি) : ঢাকা স্টক একচেঞ্জ পিএলসি’র (ডিএসই) ওয়েব সাইটে থাকা তথ্য অনুযায়ী কর্পোরেট সংবাদ কর্তৃক ফ্যামিলিটেক্স বাংলাদেশ লিমিটেড পর্যালোচনা দেখা যায় ২০২৩ সালে কোন ক্রেডিট রেটিং ইনফরমেশন নেই। কোম্পানির ওয়েব সাইট “http://www.familytexbd.com” থাকার সত্ত্বেও বিনিয়োগকারীর জন্য যে তথ্য থাকার কথা তার কিছুই নেই।

ডিএসইসি’র ওয়েব সাইটে কোম্পানির প্রধান কার্যলয়ের ঠিকানা “ হাউজ # ১২৭ (৪র্থ তলা), রোড # ১০, ব্লক# সি, নিকেতন, গুলশান ঢাকা” দেয়া থাকলেও ফ্যাক্টোরির কোন ঠিকানা দেওয়া নেই। কোম্পানির ই-মেল আইডি “info@familytexbd.com” এবং দুইটি টিএনটি নাম্বার “৮৮০-২-৯৮৮১৯৪১, ৯৮৮১৮০৬ ” দেওয়া থাকলেও ফোন করলে সব সময় বন্ধ পাওয়া যায়। ডিএসি’র ওয়েব সাইটে কোম্পানি সেক্রেটারির নাম, মোবাইল ও ফোন নাম্বার দেওয়া নেই । এটা বিনিয়োগকারীদের সাথে এক ধরনের প্রতারণার বলে মনে করা হচ্ছে। এভাবে কতৃপক্ষের তথা ডিএসসি, সিএসসি ও বিএসইসির চোখ ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর বিনিয়োগকারীদের হতাশ করে চলেছে ফ্যামেলিটেক্স বাংলাদেশ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদ।

প্রসঙ্গগত, কোম্পানিটির বিগত পাঁচ বছরে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২০২০ সালে মাইনাস ০ টাকা ১৫ পয়সা, ২০১৯ সালে মাইনাস ০ টাকা ০৮ পয়সা, ২০১৮ সালে মাইনাস ০ টাকা .০৭২ পয়সা, ২০১৭ সালে মাইনাস ০. টাকা.০৪৪ পয়সা ও ২০১৬ সালে ০ টাকা ৮২ পয়সা।

কোম্পানিটির বিগত পাঁচ বছরের শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ (এনএভি) ২০২০ এ হয়েছে ১১ টাকা ৪৮ পয়সা, ২০১৯ সালে ১১ টাকা ৬৩ পয়সা, ২০১৮ সালে ১২ টাকা ২৯ পয়সা, ২০১৭ সালে ১২ টাকা ৯৮ পয়সা ও ২০১৬ সালে ১৩ টাকা ৬৮ পয়সা।

লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, বিগত পাঁচ বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০১৮ সালে ৫ শতাংশ নগদ, ২০১৭ সালে ৫ শতাংশ নগদ, ২০১৬ সালে ৫ শতাংশ নগদ , ২০১৪ সালে ১০ শতাংশ নগদ ও ২০১৩ সালে ১০০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। কোম্পানিটি ২০২৩,২০২২,২০২১ ও ২০২০ লভ্যাংশ দেয়নি।

৩০-৬-২০২০ সমাপ্ত বছরে সর্ব শেষ তথ্য মোতাবেক কোম্পানির রির্জাভে রয়েছে মাইনাস ৫২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা এবং দীর্ঘ মেয়াদী লোন রয়েছে ০ টাকা ও স্বল্প মেয়াদী লোন রয়েছে ৩১ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। ডিএসিতে কোম্পানির কোন ক্রেডিট-রিটিং তথ্য দেওয়া নেই। অর্থাৎ কোম্পানির আদৌও কোন ক্রেডিট-রেটিং রির্পোট হয়েছে বলে দৃশ্যমান হয়নি।

ফ্যামিলিটেক্স বাংলাদেশ লিমিটেড কোম্পানিটি ৪০০ কোটি টাকা অনুমোধিত মূলধন নিয়ে দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে তালিকাভূক্ত হয়। বর্তমানে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩৫৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের সংখ্যা ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৬০ হাজার ৩৮৮ টাকা।
ডিএসই’র তথ্য অনুযায়ী ৩০-৬-২০২২ ইং তারিখে উদ্যোক্তা-পরিচালকের হাতে রয়েছে ৪.০২ শতাংশ শেয়ার, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ১৮.৪১ শতাংশ শেয়ার এবং বাকি ৭৭.৫৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।

গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ার দর উঠানামা হয়েছে ২.৭০ টাকা থেকে ৫.০০ টাকায়। গতকাল কোম্পানিটির দর উঠানামা হয়েছে ৪.০০ থেকে ৪.৩০ টাকার মধ্যে। শেয়ারটি আজ ট্রেড হয়েছে ৪.০০ থেকে ৪.৩০ মধ্যে। এছাড়া গতকালের সমপনী দর ছিল ৪.২০ টাকা এবং আজকের ওপেনিং দর ছিল ৪ টাকা ৩০ পয়সা ও সমপনীদর ৪ টাকা ০ পয়সা। ২০১৩ সালে পুঁজিবাজারের তালিকাভূক্ত হয়ে ফ্যামিলিটেক্স লিমিটেড কোম্পানিটি বর্তমানে জেড ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে।

কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে মাইনাস ০ টাকা ১৫ পয়সা, এনএভি ১১ টাকা ৪৮ পয়সা এবং রিটেইন আর্নিং বা রিজার্ভ রয়েছে ৫২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা টাকা ও স্বল্প মেয়াদী লোন রয়েছে ৩১ কোটি ৯৮ লাখ ২০ হাজার টাকা । এছাড়া কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী লোন ০ টাকা । অর্থাৎ সব আর্থিক পেরামিটারই নিগেটিভ তারপরও কোম্পানিটির শেয়ার দর বাড়ছে।

পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে রয়েছে ৪.০২ শতাংশ আর সাধারণ বিনিযোগকারীদের হাতে রয়েছে ৭৭.৫৭ শতাংশ শেয়ার। অর্থাৎ উদ্যোক্ত পরিচালকদের হাতে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারনের কথা থাকলেও বিগত কয়েক বছর যাবত তার কোন পদক্ষেপ নেই।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাদের কর্পোরেট গভর্নেন্স কোড (সিজিসি) ২০১৩ সালে তে প্রত্যেক তালিকাভূক্ত কোম্পানিতে কোম্পানির সেক্রেটারি নিয়োগ বাধ্যতামূলক করেছে কিন্তু ফ্যামিলিটেক্স পরিচালনা পর্ষদ গত ৫ বছরে ও কোম্পানির কোন সেক্রেটারি নিয়োগ দেয়নি অথচ বিএসইসিসি,ডিএসসি,বিএনসি চুপচাপ রয়েছে । কোম্পানির বিরুদ্ধে এ বিষয়ে কোন শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করেনি।