মৌলভীবাজারে দুর্ধর্ষ ডাকাতি মূল্যবান মালামাল লুট

Posted on February 11, 2024

তিমির বনিক" স্টাফ রিপোর্টার:মৌলভীবাজার সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে ভোরে সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এসময় ডাকাতরা স্বর্ণ, মোবাইল ফোনসহ নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত মোস্তফা মিয়া মহালদারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোববার ভোরে মুখে কালো কাপর বাঁধা অবস্থায় ৭ থেকে ৮ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ওই বাড়িতে হানা দেয়। এসময় একতলা ওই ঘরের জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশ করে। পরে ভিতরের দরজা দিয়ে অন্যরা প্রবেশ করে। এসময় ঘরের সবাই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন।

ডাকাতদের প্রবেশের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে সবার ঘুম ভাঙ্গে। ডাকাতরা প্রথমে মোস্তফা মিয়া মহালদারের ছোট ছেলে ও কমিউনিটি ক্লিনিক কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম মনসুরের কক্ষে প্রবেশ করে তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আলমারির তালা ভেঙ্গে সেখান থেকে ৬ থেকে ৭ ভড়ি স্বর্ণ ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে।

এসময় মাজহারুল ইসলাম মনসুর চিৎকার করলে ডাকাতরা তাঁর ৩ বছর বয়সী শিশু ফাইজা তাফসিন এর গলায় ছুরি দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়।

ওই ঘটনার সময় পাশের রুমে থাকা মনসুরের বড় ভাই নাজমুল হক আলী থাকেন। সেখানের দরজার সামনেও অবস্থান নেয় ডাকাত দলের ৩ সদস্য। বিষয়টি বুঝতে না পেরে প্রথমে আলীর ধারণা তাঁর অসুস্থ মা ডাকছিলেন।

এসময় দরজা খুলে দেখেন সেখানে ডাকাতদলের ৩ জন দাঁড়ানো। দেখেই দরজা বন্ধ করে পিছনের জানালা দিয়ে তিনি ঘরে ডাকাত এসেছে বলে আশপাশের লোকজনকে চিৎকার করে ডাকাডাকি করতে থাকেন। ওই সময় ডাকাতরা আশেপাশের লোকজন চলে আসার ভয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে চলে যায়।

নাজমুল হক আলী বলেন, দেশীয় তৈরি দা সহ অস্ত্র সস্ত্রে সজ্জিত ডাকাতরা জানালার গ্রিল কেটে প্রবেশ করে স্বর্ণ, দু'টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা ভয়ভীতি দেখিয়ে লুট করে নিয়ে যায়। এসময় ডাকাতদের একজন নাম ধরে তাঁর ছোট ভাই মনসুরকে ডাকে বলেও জানা যায়।

খবর পেয়ে এরই মধ্যে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস্) পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায়, সদর থানা পুলিশের ওসি কে এম নজরুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম সহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা বাড়ির লোকজন সহ আশপাশের লোকজনের সাথে কথা বলে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছে।

পুলিশ ছাড়াও ওই ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সহ জনপ্রতিনিধিরা পরিদর্শনে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন।জানা যায়, ওই গ্রামে ডাকাতির ঘটনা এবারই প্রথম। এর আগে এমন বড় ধরণের কোন চুরি কিংবা ডাকাতির ঘটনা খুব একটা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণ গ্রামটিতে হটাৎ এমন ঘটনায় স্থানীয়রা আতঙ্কিত। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখছেন।

জানতে চাইলে মোস্তফাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজ জানান, বিষয়টি দু:খজনক। আমরা এলাকাবাসীকে নিয়ে বৈঠক করে দ্রুত কঠোর প্রদক্ষেপ নেবো।

মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর রহমান বলেন, পুলিশ তদন্ত করছে, যত দ্রুত সম্ভব আমরা এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করার চেষ্টা করছি।