কুয়াকাটায় রাস্তা সংস্কারে ধীরগতি, দূর্ভোগে দর্শনার্থী

Posted on February 11, 2024

মোঃ বাদল হোসেন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় রাস্তা সংস্কারে ধীরগতিতে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে দর্শানার্থীসহ স্থানীয় পথচারী। কুয়াকাটার অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে মিশ্রীপাড়া।যেখানে রয়েছে এশিয়া মহাদেশের বৃহৎ বৌদ্ধ বিহার,রাখাইন পল্লী। এছাড়াও সেখানের স্থানীয় বাজারে রয়েছে রাখাইনদের হাতের তৈরির বিভিন্ন পোশাক সামগ্রী। কুয়াকাটা আগত পর্যাটকরা এসব পোশাক সামগ্রী ও বৌদ্ধ বিহার দেখার জন্য ছুটে চলে মিশ্রীপাড়াতে।কুয়াকাটা থেকে মিশ্রীপাড়ার দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার।

এরমধ্যে কুয়াকাটা পৌরসভার পর থেকে লতাচাপলী ইউনিয়নের কচ্ছপআলী থেকে লক্ষীর বাজার পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার রাস্তা খুবই দুরবস্থা। রাস্তার কার্পেটিং উঠে গেছে।তৈরি হয়েছে ছোট- বড় গর্তে। আর এই রাস্তা দিয়ে ভ্যান,আটোবাইক,মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন দিয়ে চলাচল করতে গিয় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পর্যটক সহ স্থানীয়রা। গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের স্থানীয় ও আগত পর্যটকদের দুর্ভোগ লাভবের কথা চিন্তা করে রাস্তাটি সংস্কার কাজের জন্য দরপত্র আহবান করেন পটুয়াখালী এলজিডি। কিন্তু সংস্কার কাজ শুরু করে দীর্ঘদিন রাস্তাটি ফেলে রেখেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।

তাই ঠিকাদারের গাফলিতির কারণে এখনো ভাঙ্গাচুর অবস্থায় পড়ে রয়েছে রাস্তাটি। রাস্তা সংস্কারের ধীরগতির কারণে দুর্দশরা শেষ থাকছে না পর্যাটকদের।যার ফেলে দিনে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে তারা।কলাপাড়া এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায় , প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজটি পান। পরে বরগুনার শাহিন নামে এক ঠিকাদার তাদের নিকট থেকে কাজটি ক্রয় করেন। তিনি শুরু করে কিছুটা কাজ করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখে। যার ফলে কোন উপকারে আসছে না রাস্তাটি।

স্থানীয় বাসিন্দা মিরাজ ও আলমগীর মুসুল্লি বলেন, এটা একটি পর্যটন এলাকা। প্রতিদিন শতে শতে দর্শানার্থীরা এই রাস্তা দিয়ে ছুটে চলে। কিছু রাস্তাটির খুবই বেহাল অবস্থা। ২০০৭ সালে রাস্তাটি নির্মানের মাত্র একবার সংস্কার হয়েছে। এখন রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা যায় না।খুবই সমস্যা হচ্ছে। শুনছি রাস্তায় নতুন করে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।১ কিলোমিটারের মতো করে ফেলে রেখেছে। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ হলে স্থানীয়দেরসহ পর্যটকদের খুবই উপকার হতো।

আটোচালক নুরুল হক ও আনোয়ার মুন্সি বলেন, কুয়াকাটার থেকে দৈনিক পর্যটকরা রাখাইন পল্লী দেখার জন্য আসে।কিন্তু রাস্তা এত খারাপ যে একবার যে আসে দ্বিতীয়বার আর সে আসতে চায় না। এত পরিমাণ রাস্তা ভাঙা যে গাড়ি চালানো দুষ্কর হয়ে পরে। এভাবে রাস্তাটি পরে থাকলে পর্যটক সংখ্যা কমতে থাকবে। তাই আমাদের দাবি যেন তারাতাড়ি এই রাস্তাটুকু কাজ করা হয়।

কুয়াকাটা থেকে মিশ্রীপাড়ায় ঘুরতে আসা মোঃনজরুল ইসলাম নামে এক দর্শানার্থী বলেন, আমার হাজার হাজার টাকা খরচ করে কুয়াকাটার বিভিন্ন সৌন্দর্য দেখতে আসি।কিন্তু রাসাঘাটের যে অবস্থা তাতে আমাদের টাকাটাই জলে চলে যাচ্ছে। রাস্তা গুলো ভাঙ্গাচুরা।রাস্তার কারনে পরিবেশ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এরকম অবস্থায় রাস্তা থাকলে দর্শানার্থীরা তো কুয়াকাটা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। আমি আর দ্বিতীয়বার কুয়াকাটায় আসবো না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আলী হোসেন বলেন, রাস্তাটি ৭ বছর ধরে এই খানাখন্দ অবস্থায় পরে আছে। এতে এলাকার লোকজনের চলাচল করতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের।যেসকল পর্যটকরা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আসে তারা সকলেই এই রাস্তা দিয়ে মিশ্রীপাড়ার বৌদ্ধ বিহার ও রাখাইন পল্লী দেখতে ছুটে আসে। তাই রাস্তাটা নতুন করে সংস্কার হলে সকলেরই ভালো হতো।
রাস্তাটির ক্রয়কৃত ঠিকাদার মোঃ শাহীন বলেন, আগামী ৪-৫ মাসের মধ্যে রাস্তাটি সংস্কার কাজ শেষ করা হবে।

কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ সাদেকুর রহমান বলেন, স্থানীয় ও পর্যকটের দূর্ভোগ লাগবের জন্য স্টিমিট মতো অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তাটির সংস্কার কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে জোরালো ভাবে বলা হবে।