কোম্পানি সেক্রেটারি ও ওয়েব সাইট ছাড়াই চলছে সি এন্ড এ টেক্সটাইলস

Posted on February 8, 2024

রফিকুল ইসলাম (রাব্বি) : ডিএসসির ওয়েব সাইটে থাকা তথ্য অনুযায়ী কর্পোরেট সংবাদ কর্তৃক সি এন্ড টেক্সটাইলস পর্যালোচনা দেখা যায় ২০২৩ সালে কোন ক্রেডিস রেটিং ইনপরমেশন নেই। কোম্পানির ওয়েব সাইট না থাকায় বিএসইসি কোন নির্দেশনায় আদৌ পরিপালন হয়েছে কিনা তা বুঝার উপায় নেই। কোন প্রাইস সেন্সিটিভ ইনপরমেশন আদৌ প্রকাশ করেছে কিনা সেই তথ্য নেই। অর্থাৎ কোম্পানির ওয়েব সাইটে বিনিয়োগকারীর জন্য যে তথ্য থাকার কথা তার কিছুই নেই।

ডিএসসির ওয়েব সাইটে কোম্পানির প্রধান কার্যলেয় ঠিকানা “৩২/এ, বিএসসিআইসি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট rn কালুরঘাট (এক্স), চাঁদগাঁও, rn চিটাগং, বাংলাদেশ” দেয়া থাকলেও ফ্যাক্টোরির কোন ঠিকানা দেওয়া নেই। কোম্পানির ই-মেল আইডি cnabd23@gmail.com” দেয়া থাকলেও ওয়েব সাইটের লিংক দেয়া নেই এবং দুটি টিএনটি নাম্বর “৮৮০-৩১-৬৭০২৬৪, ৬৭২৮১৭” দেওয়া থাকলেও ফোন করলে সব সময় বন্ধ পাওয়া যায়। ডিএসসির ওয়েব সাইটে কোম্পানি সেক্রেটারির নাম, মোবাইল ও ফোন নাম্বার এবং ই-মেইল আইডি কিছুই দেয়া নেই। এটা বিনিয়োগকারীদের সাথে এক ধরনে প্রতারণা বলে মনে করেন পুঁজিবাজারের বিশ্লেষকগণ। এভাবে কতৃপক্ষের তথা ডিএসসি, সিএসসি ও বিএসইসির চোখ ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর বিনিয়োগকারীদের হতাশ করে চলছে সি এন্ড এ টেক্সটাইলস কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদ।

কোম্পানিটির বিগত পাঁচ বছরে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২০২৩ সালে ১৯ পয়সা, ২০২২ সালে ১০ পয়সা, ২০২১ সালে মাইনাস ৫ টাকা ৭ পয়সা, ২০২০ সালে মাইনাস ১ টাকা ২৮ পয়সা ও ২০১৯ সালে মাইনাস ১ টাকা ২৮ পয়সা।

কোম্পানিটির বিগত পাঁচ বছরের শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ ২০২৩ এ হয়েছে মাইনাস ৩ টাকা ৮১ পয়সা, ২০২২ সালে মাইনাস ৩ টাকা ৬১ পয়সা, ২০২১ সালে মাইনাস ৪ টাকা ৬ পয়সা, ২০২০ সালে ১ টাকা ১ পয়সা ও ২০১৯ সালে ছিল ২ টাকা ২৮ পয়সা।

লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, বিগত পাঁচ বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ২০২৩ সালে ০.৫০ শতাংশ নগদ, ২০২২ সালে ০.৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ , ২০১৬ সালে ১০ শতাংশ স্টক, ২০১৫ সালে ১২ শতাংশ স্টক, ও ২০১৪ সালে ১১ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে। কিন্তু কোম্পানিটি ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে কোন লভ্যাংশ দেয়নি।

৩০-৬-২০২৩ সমাপ্ত বছরে সর্ব শেষ তথ্য মোতাবেক কোম্পানির রিজাভে রয়েছে মাইনাস ৩৩০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং দীর্ঘ মেয়াদী লোন রয়েছে ১৫৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ডিএসিতে কোম্পানির কোন ক্রেডিট-রিটিং তথ্য দেওয়া নেই। অর্থাৎ কোম্পানির আদৌ কোন ক্রেডিট-রেটিং রির্পোট হয়েছে বলে দৃশ্যমান হয়নি।

উল্লেখ্য যে, টেক্সটাইলস খাতের কোম্পানিটি ৩০০ কোটি টাকা অনুমোধিত মূলধন নিয়ে দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জে ২১-১-২০১৫ ইং তারিখে তালিকাভূক্ত হয়। বর্তমানে পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ২৩৯ কোটি ৩১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের সংখ্যা ২৩ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ৩০-৬-২০১৭ ইং তারিখে উদ্যোক্তা-পরিচালকের হাতে রয়েছে ২২.১৪ শতাংশ শেয়ার প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ১৪.৪৯ শতাংশ শেয়ার এবং বাকি ৬৪.৩৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। কিন্তু ৩০-৬-২০২৩ সমস্ত বছরের শেয়ার হোল্ডিং পজিশন ডিএসইতে দেখানো হয়নি। অর্থাৎ কোম্পানিটি প্রতিমাসে শেয়ার হোল্ডিং রির্পোটিও করে না বা করলেও ডিএসসি তা আপডেট করে না বলে প্রতীয়মান হয়।

গত এক বছরের কোম্পানিটির শেয়ার দর উঠানামা হয়েছে ৭.১০ টাকা থেকে ১২.৫০ টাকায়। গতকাল কোম্পানিটির দর উঠানামা হয়েছে ৮.০০ থেকে ৮.৬০ টাকার মধ্যে এবং শেয়ারটি ট্রেড হয়েছে ৮.৯০ থেকে ৯.৪০ মধ্যে। এছাড়া গতকালের সমপনী দর ছিল ৪.৬০ টাকা যা আজকে বেড়ে হয়েছে ৯.২০ টাকা। ২ ০১৫ সালে পুঁজিবাজারের তালিকাভূক্ত হয়ে সি এন্ড এ টেক্সটাইলস কোম্পানিটি বর্তমানে বি ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ২০২৩ সালে ০.৪০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানিটিকে জেট কেটাগরিতে যাওয়া ঠেকালেও আসলে কি কোম্পানির অবস্থা ভালো ? কোম্পানিটির ইপিএস মাইনাস ৫ টাকা ৭ পয়সা, এনএভি মাইনাস ৩ টাকা ৪১ পয়সা এবং রিটেইন আরনিং হয়েছে মাইনাস ৩৩০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ।এছাড়াও কোম্পানিটির দীর্ঘমেয়াদী লোন ১৫৫ কোটি ৮৫ টাকা। অর্থাৎ সব আর্থিক পেরামিটারই নিগেটিভ তারপরও কোম্পানিটির শেয়ার দর বাড়ছে।

পর্যবেক্ষনে দেখো যায়, কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকের হাতে রয়েছে ২২.১৪ শতাংশ শেয়ার আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে ৬৬.৩৪ শতাংশ শেয়ার। অর্থাৎ উদ্যোক্তা পরিচালকেরদের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারনের কথা থাকলেও বিগত কয়েক বছর যাবত তার কোন পদক্ষেপ নেই। আবার বিএসইসিরও এই ব্যাপারে কোন ভূমিকা নেই। এ ক্ষেত্রে একইভাবে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকেরদের নামে পৃথকভাবে সর্বনিম্ন ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যকতা থাকলেও দীর্গদিন যাবত কোম্পানির পরিচালনায় পর্ষদ তা মানছে না বা বাস্তবায়ন করছে না অথচ বিএসইসিও চুপচাপ রয়েছে।