কম্বল মুড়িয়ে দেওয়ার পরও শীতে কাঁপছে গবাদিপশু

Posted on January 22, 2024

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: প্রচন্ড ঠান্ডা আর তীব্র শীত থেকে গৃহপালিত পশু গরু, মহিষ, ছাগল ভেঁড়াকে রক্ষায় মোটা কম্বল, চট কিংবা কাঁথা শরীরে জড়িয়ে দিয়েছেন কৃষকেরা। তারপরও শীত নিবারণ হচ্ছে না যেন। ঠান্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে গবাদিপশু গুলো। এতো কিছু দিয়ে ঢেকে রাখার পরও শীতে কাঁপছে তারা- এমনটি বলছিলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর সদরের গৃহবধূ সুখিতন বেগম।

তিনি বলেন , গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলমান শৈত্যপ্রবাহে তীব্র শীতে মানুষের মতই গবাদি পশুদেরকেও চরম কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। তাই শীত ও ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে তাদের শরীরে মোটা ধরণের কাঁথা- কম্বল কিংবা চট রাখা হচ্ছে।

জানা গেছে, চলনবিল অধ্যুষিত এলাকায় টানা ৭ দিন পর দুপুরের দিকে কিছুক্ষণের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও শীতের তীব্রতা যেন আরও বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশা আর উত্তরের ঠান্ডা বাতাসে মানুষের জামা-কাপড় ভেদ করে শীত শরীর স্পর্শ করছে। আর এ থেকে শুধু মানুষ নয় গবাদিপশুও রেহাই পাচ্ছে না।

শীতের চলমান দাপটে জবুথবু অবস্থায় কৃষক এবং খামারিদের বাড়িতে রাখা গরু-ছাগল, মহিষ, ভেঁড়াসহ অন্যান্য গৃহপালিত পশুর কষ্টও বহু গুণে বেড়ে গেছে। বিশেষ করে রাতে ও সকালে শীতের কারণে গবাদিপশু গুলো কাঁপতে থাকে। স্বাভাবিক খাবারও খেতে চায়না। এ কারণে অনেক কৃষক মানুষের ব্যবহৃত কম্বল, চট, পুরনো জামা-কাপড় কেটে গবাদিপশুর শরীরে জড়িয়ে রাখছেন। এছাড়াও কেউ কেউ পাটের বড় বস্তা (চট) কেটে ও মানুষের ব্যবহৃত পুরাতন কম্বল গরু-ছাগলের শরীরে জড়িয়ে রাখছেন।

উপজেলার নাদো সৈয়দপুর গ্রামের খামারী কৃষক আব্দুল করিম বলেন, তার খামারে উন্নত জাতের চারটি ষাড় গরু ও দুইটি গাভী রয়েছে। এসব গরুগুলোকে শীত থেকে রক্ষায় গোয়াল ঘরের মেঝেতে প্লাষ্টিকের ম্যাটস, শরীরে পাটের বস্তার, কম্বল দিয়ে জড়িয়ে রাখছেন। এছাড়াও রাতে বাতাস না ঢুকে এজন্য গোয়াল ঘরের বেড়া পলিথিন কিংবা ক্যারালিন জাতীয় কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখার পাশাপাশি মোটা কাপড়ের মশারি টানিয়ে রাখছি। তারপরও গবাদিপশু গুলোর অবস্থা জবুথবু।

এ ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শীতের কারণে অনেক কৃষক তাদের গবাদিপশুগুলো গোয়াল থেকে বের করছেন না। অনেকে তাদের ব্যবহৃত বা পুরাতন জামা-কাপড় দিয়ে ছাগলের শরীর ঢেকে রাখছেন। কেউ কাঁথা বা বস্তার চটে, কম্বলে গরুকে ঢেকে উষ্ণ রাখার চেষ্টা করছেন।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. অলিউল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে শীতের প্রচন্ড দাপট চলছে। তাই শীত থেকে রক্ষার জন্য গবাদিপশুকে যে কোন উপায়ে ঢেকে রেখে উষ্ণতার ব্যবস্থা করতে। তাই এ সময় গোয়ালঘরে যাতে ঠান্ডা বাতাস না ঢুকে তার ব্যবস্থা করতে হবে। ঠান্ডাজনিত রোগ যাতে না হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আর শীতে গবাদিপশু এমনিতেই কম খেয়ে থাকে।