সিরাজগঞ্জ এলজিইডিতে দুই নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালনে ঠেলাঠেলি

Posted on January 15, 2024

সাব্বির মির্জা, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দুই নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন নিয়ে ঠেলাঠেলি চলছে। দুই মাস আগে কর্তব্যরত নির্বাহী প্রকৌশলীর শফিকুল ইসলামের শাস্তিমূলক অন্যত্র বদলীর আদেশ হয়। এরপর পাবনা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলামকে নতুন নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই মাস কেটে গেলেও নানা নাটকীয়তার পরও কর্তব্যরত নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম নতুন নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি।

রবিবার (১৪ জানুয়ারী) দায়িত্ব বুঝে দেওয়ার কথা থাকলেও অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন শফিকুল। এরপর বাধ্য হয়ে দুপুরে ‘অ্যাসুউম’ পদ্ধতিতে নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব গ্রহন করেন মনিরুল। তারপরও শেষ রক্ষা না হওয়ায় তাকে অফিস ত্যাগ করতে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পাবনা আঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, গত দুই মাস আগে (১৫ নভেম্বর) সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুলকে পাবনায় আমার স্থলে বদলী করা হয়। এরপর নতুন কর্মস্থালে যোগদান করতে দুই মাসে বেশ কয়েকবার সিরাজগঞ্জ এসেছি। কিন্তু শফিকুল দায়িত্ব বুঝে দেননি। আজকে দায়িত্ব বুঝে দেওয়ার কথা থাকলেও সে অফিসে অনুপস্থিত ছিলেন। এরপর অ্যাসুউম করে যোগদান করে কপি প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠিয়ে দেই। এরপর শফিকুল আমাকে অফিসের পিয়ন মারফত হোয়াটসঅ্যাপে অপর একটি আদেশ ধরিয়ে দেন। তাতে দেখা যায় পুর্বে ১৫ নভেম্বর দেওয়া অফিস আদেশটি ৬দিন পর গত ২১ নভেম্বর রোহিত করা হয়েছে। প্রধান প্রকৌশলী এমন আদেশ আমাকে না দিয়ে একতরফা শুধু শফিকুলের কাছে সরবরাহ করার উদ্দেশ্য সত্যই রহস্যজনক। প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে এমন নাটকই যদি করা হবে, তাহলেও একই অফিস থেকে আমাকে যোগদান করতে বলাটাও যুক্তিযুক্ত নয়।

এ বিষয়ে জানতে রবিবার (১৪ জানুয়ারী) বিকেলে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আলী আকতার হোসেনের মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে একাদিকবার কল ও ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। একই ভাবে চেষ্টা করা হলেও নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুলও সাড়া দেননি। এরপর সিরাজগঞ্জ এলজিইডি অফিসে সরজমিন গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এবিএম জুলফিকার আলী বলেন, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ-বারুহাস-কুন্দইল সড়ক ও ভদ্রাবতি (উত্তর-দক্ষিন) খাল খননসহ জেলার রায়গঞ্জ, কাজিপুর, উল্লাপাড়া, কামারখন্দ ও তাড়াশ উপজেলার বেশকিছু প্রকল্পে অনিয়ম এবং প্রত্যায়নপত্র ছাড়া ঠিকাদারদের চুড়ান্ত বিল প্রদানের অভিযোগে প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিজ দপ্তর ও দুনীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক তিনটি তদন্ত কার্যক্রম চালু রয়েছে। আমি নিজেও তার ওপর বিব্রত। যে কারনে আমি সিরাজগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসেও যাই না। গত ১৫ নভেম্বর শফিকুলের শাস্তিমুলক বদলী হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কারনে চাপে পড়ে প্রধান প্রকৌশলী তা স্থগিত করেন। পরবর্তীতে সেটি আবারও বাতিল করার কথা থাকলেও এখনও তা হয়নি। সেটি হয়ত বাতিল হয়ে যাবে।